বৃহস্পতিবার , ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রকাশিত: ১২:২৬ ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
দীর্ঘ দুই বছরের সংঘাত, ধ্বংস ও মৃত্যুর মাঝেও গাজায় জন্ম নিল নতুন জীবনের আশা। মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে এক সঙ্গে ৫৪টি দম্পতির গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এই বিশেষ আয়োজনটি বাস্তবায়ন করে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক মানবিক সংস্থা আল ফারেস আল শাহিম, যা যুদ্ধের ছায়ায় থেকেও একটি আনন্দময় মুহূর্ত উপহার দেয়।
ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিতে বিবাহকে সামাজিক ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখা হয়, তবে চলমান যুদ্ধে গাজায় বিয়ের আয়োজন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির পর কিছুটা স্বাভাবিকতা ফিরলেও বড় ধরনের উৎসব এখন সম্ভব নয়। ধ্বংসস্তূপের পাশে নববধূরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করেছেন, বররা স্যুটে সৌন্দর্য এবং মর্যাদা নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। নবদম্পতি হিকমাত লাওয়া (২৭) বলেন, “সবকিছু সত্ত্বেও আমরা নতুন জীবন শুরু করছি। আল্লাহ চাইলে এই যুদ্ধ এখানেই শেষ হবে।” তাঁর স্ত্রী ইমান হাসান লাওয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এত শোকের পর আনন্দ অনুভব করা কঠিন। আল্লাহ চাইলে আমরা আবার সবকিছু গড়ে তুলব।”
স্থানীয়রা নবদম্পতিদের শুভেচ্ছা জানাতে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়াচ্ছিলেন, তবে চলমান মানবিক সংকট আনন্দকে কিছুটা ম্লান করে দিচ্ছিল। উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত, অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, এবং খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তুলেছে।
হিকমাত আরও বলেন, “একসময় স্বপ্ন ছিল একটা বাড়ি, একটি চাকরি, স্বাভাবিক জীবন। এখন আমার স্বপ্ন শুধু একটি তাঁবু।” এই গণবিয়ে যুদ্ধের ক্ষতেও নতুন জীবন শুরু করার সাহস, ভালোবাসা এবং মানবিক প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। মানুষ দেখিয়েছে—ধ্বংসের মাঝেও জীবন থেমে থাকে না, আশা কখনো নিভে যায় না।
