ইডেন ছাত্রীকে বাসায় আটকে ধর্ষণ করেন গায়ক নোবেল!

ইডেন ছাত্রীকে বাসায় আটকে ধর্ষণ করেন গায়ক নোবেল!

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:১০ ২০ মে ২০২৫

যিনি এক সময় ‘তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো’ গানে কোটি তরুণের হৃদয় জিতে নিয়েছিলেন, সেই মাইনুল আহসান নোবেল আজ দেশজুড়ে নিন্দার পাত্র। গায়ক নয়, তিনি এখন একজন অভিযুক্ত ধর্ষক— এক ছাত্রীকে সাত মাস ধরে গোপনে আটকে রেখে তার ওপর চালিয়েছেন নির্মম যৌন ও শারীরিক নির্যাতন। রাজধানীর ডেমরা থানা পুলিশ সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

সেই মেয়েটি— ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী— কোনোদিন ভাবেননি, যাকে তিনি ভালোবেসেছিলেন, বিশ্বাস করেছিলেন, সেই মানুষটিই তাকে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে একটি ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন নোবেল, দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন, মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছেন। এমনকি তার গোপন মুহূর্তগুলোর ভিডিও তুলে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছেন।

সবচেয়ে মর্মান্তিক হলো, ঘটনা সামনে আসে এক ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে— যেখানে দেখা যায়, এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে জোর করে টেনে নামাচ্ছেন নোবেল। এই ভিডিও দেখে মেয়েটির পরিবার টাঙ্গাইল থেকে ছুটে আসে ঢাকায়। এরপর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানায়। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারের সময় নোবেল দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন। প্রযুক্তির সাহায্যে রাত ২টার দিকে তাকে ধরা হয়।

এই ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যারা নোবেলকে কাছ থেকে দেখেছেন, জানেন— তার বিতর্কের ইতিহাস দীর্ঘ। ২০১৯ সালে মাদকাসক্তির কারণে সংসার ভেঙে যায়। ২০২৩ সালে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। কনসার্ট বাতিল, অর্থ আত্মসাৎ, অহংকার— সবই তার নামে পরিচিত শব্দ।

কিন্তু এবারকার অভিযোগ সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। প্রেমের নামে ফাঁদ, দিনের পর দিন ধর্ষণ, ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল— এমন অভিযোগের পরেও যদি কেউ শিল্পী হিসেবে তার কথা বলেন, সেটা এই সমাজের জন্য লজ্জাজনক।

এক সময় যারা তাকে দেখে গর্ব করতেন, আজ তার নাম শুনলেই বিষাদে ভরে ওঠে মুখ। বিশেষ করে সেই তরুণী— যার জীবন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে এই শিল্পীর হাতে— তার পাশে এখন দাঁড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব।

নোবেলকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেছে। আইন এখন নিজের পথে হাঁটবে।

আর মানুষ? তারা প্রশ্ন তুলছে— “তারকা হলেই কি দায়মুক্তি পাওয়া যায়?”
না, পাওয়া যায় না। পাওয়া উচিতও না।

বিজ্ঞাপন