Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

তালেবানের সঙ্গে হাত মেলালো ভারত: নতুন ভূরাজনীতির সূচনা

তালেবানের সঙ্গে হাত মেলালো ভারত: নতুন ভূরাজনীতির সূচনা

তালেবানের সঙ্গে হাত মেলালো ভারত: নতুন ভূরাজনীতির সূচনা

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ১২:১০ ১১ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মানচিত্রে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। একসময় যাকে ভারত সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি মনে করত, সেই আফগান তালেবান সরকারের সঙ্গেই এখন দিল্লি কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পথে হাঁটছে। এই অভূতপূর্ব ঘটনাটি শুধু আফগানিস্তান–ভারত সম্পর্কের নতুন অধ্যায় নয়, বরং পাকিস্তানের জন্যও এক বড় কূটনৈতিক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

২০২১ সালে পশ্চিমা মদদপুষ্ট আশরাফ গনি সরকারের পতনের পর তালেবানের ক্ষমতা দখল ভারতের জন্য ছিল এক অস্বস্তিকর বাস্তবতা। কিন্তু মাত্র চার বছরের ব্যবধানে সেই তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নয়াদিল্লি সফর দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্যের সূচনা করেছে।

মুত্তাকির আট দিনের ভারত সফরে তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। আলোচনায় উঠে আসে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের নানা দিক। বৈঠকের পর নয়াদিল্লি ঘোষণা করে, তারা কাবুলে পুনরায় দূতাবাস খুলবে—যা ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা কেবল আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাই নয়, আফগানিস্তানের পুনর্গঠনেও বড় ভূমিকা রাখবে।” তিনি আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

অন্যদিকে আমির খান মুত্তাকি ভারতকে “ঘনিষ্ঠ বন্ধু” হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, “এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।” সফররত আফগান প্রতিনিধিদল ভারতের ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গেও বৈঠক করছে, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের ভিত্তি শক্ত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তান নিজেকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই সম্পর্কের অবনতি স্পষ্ট। সীমান্তে সংঘর্ষ, নিরাপত্তা ইস্যু ও টিটিপি–সংক্রান্ত উত্তেজনায় কাবুল–ইসলামাবাদ সম্পর্কের টানাপোড়েন বেড়েছে। ভারত–তালেবান ঘনিষ্ঠতা তাই পাকিস্তানের কূটনৈতিক স্বার্থে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হার্শ ভি পান্ত ও শিভম শেখাওয়াত এনডিটিভিকে বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় তালেবান এখন বিশ্বকে দেখাতে চায়, তারা ইসলামাবাদের ওপর নির্ভরশীল নয়। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে তারা সেই বার্তাই দিতে চাইছে।”

ভারত এখনো তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে ‘বাস্তববাদী কূটনীতি’ অনুসরণ করছে। বর্তমানে ভারতের একটি ছোট কূটনৈতিক দল কাবুলে অবস্থান করছে এবং ভারত আফগানিস্তানে নিয়মিত মানবিক সহায়তা পাঠাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই কূটনৈতিক কৌশলের পেছনে রয়েছে তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য— (১) পাকিস্তানের আঞ্চলিক প্রভাব কমানো, (২) মধ্য এশিয়ার সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করা, এবং (৩) চীন ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ভারসাম্য রক্ষা করা।

তালেবান নেতৃত্বও এখন বুঝতে পারছে, কেবল পাকিস্তানের ওপর নির্ভর করলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন। তাই তারা চীন, রাশিয়া, ইরান ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দিচ্ছে। ভারতের মতো আঞ্চলিক পরাশক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাদের জন্য এক ধরনের ‘বৈধতার প্রতীক’ হয়ে উঠছে। কৌশলগত বিশ্লেষক ব্রহ্ম চেলানি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “এই সফর পাকিস্তানের জন্য বড় কূটনৈতিক ধাক্কা এবং এটি তালেবান সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

এই সফর এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একই সময়ে তালেবান–ভারত ঘনিষ্ঠতা ইসলামাবাদের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলছে। অতীতে তালেবানবিরোধী আশরাফ গনির সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল ভারত। সেই সরকারকেই ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তালেবান। অথচ আজ সেই তালেবানই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনায় বসছে—যা দুই পক্ষের বাস্তববাদী ও দূরদর্শী কূটনীতির স্পষ্ট প্রতিফলন।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে এখন নতুন বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে—যেখানে ভারত তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে তার কৌশলগত অবস্থান শক্ত করছে, আর পাকিস্তান ক্রমেই হারাচ্ছে তার পুরোনো প্রভাব ও আস্থা।

আফগানিস্তান–ভারত সম্পর্কের এই হঠাৎ উষ্ণতা নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। একদিকে তালেবান নিজেদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চাইছে, অন্যদিকে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক ভারসাম্য পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। সবশেষে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত হয়তো পাকিস্তানই—যে দেখছে, একসময় যার মাধ্যমে সে কৌশলগত প্রভাব বিস্তার করত, সেই আফগানিস্তান এখন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/