বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৮:২৮ ১১ জুলাই ২০২৪
ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠেছে ইংল্যান্ড। তবে সেই কৃতিত্ব ছাপিয়ে হ্যারি কেইনের পেনাল্টি পাওয়া নিয়ে ফুটবলবোদ্ধা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।
ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ১৭ মিনিটে। এসময় বক্সের মধ্যে বল পেয়ে জোরালো শটে গোল আদায় করতে চান ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন। কিন্তু তিনি বলে শট নিতে গেলে তা বুট দিয়ে প্রতিহত করতে যান ডাচ ডিফেন্ডার ডেনসেল ডুমফ্রিস। তবে তার পা বলে ছোঁয়ার আগেই কেইনের শটটি নেওয়া হয়ে যায়, আর ডুমফ্রিসের শটে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়ে পড়ে গিয়ে কাতরাতে থাকেন কেইন।
এ ঘটনায় শুরুতে রেফারি ফাউলই দেননি। তবে কিছুক্ষণ ম্যাচ চলার পর খেলার মধ্যে বাঁ হাত ঢোকায় ভিএআর। রেফারিকে সাইডলাইনের টিভি রিপ্লে দেখতে বলা হয়। টিভি রিপ্লে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
যদিও রিপ্লেতে সেটিকে ফাউল বলে মনে হচ্ছিল না, টিভি ধারাভাষ্যকারদেরও মতও ছিল তা-ই। আবার ওই মুহূর্তের আগমুহূর্তে বুকায়ো সাকার হাত ছুঁয়ে বল কেইনের কাছে যায়। ফলে পেনাল্টির আগেই সেটি হ্যান্ডবল ছিল।
তবে রেফারির সিদ্ধান্তই যেখানে চূড়ান্ত, সেখানে বিতর্ক হলেও রায় যায় ইংল্যান্ডের পক্ষে। আর স্পট কিক থেকে দলকে সমতায় ফেরান কেইন।
এরপর ম্যাচে আর গোল না হলেও নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করে ইংল্যান্ডকে ফাইনালে তোলেন অলি ওয়াটকিন্স।
বিশেষজ্ঞদের মত
রেফারির এই সিদ্ধান্তকে ধুয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডেরই সাবেক দুই ফুটবলার। ম্যাচ চলাকালেই লিভারপুলের সাবেক ইংলিশ ডিফেন্ডার ও স্কাই স্পোর্টসের ফুটবল বিশেষজ্ঞ জেমি ক্যারাগার পেনাল্টির বিপক্ষে মত দেন। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এটি কখনোই পেনাল্টি নয়।’
অন্যদিকে, আইটিভির ফুটবল বিশেষজ্ঞ ও সাবেক ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি ন্যাভিলও ডাচদের বিপক্ষে ‘খুবই লজ্জজনক কাজ’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
হাফ টাইম শোতে তিনি বলেন, ‘একজন (সাবেক) ডিফেন্ডার হিসেবে আমি মনে করি, এটি একেবারেই লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত।… সে (ডুমফ্রিস) স্বাভাবিকভাবেই শটটি প্রতিহত করতে গেছে। আমার দৃষ্টিতে এটি কোনো শাস্তি নয়। এটি পেনাল্টির ধারেকাছেও নেই। আমাকে বলতেই হচ্ছে, ইংল্যান্ডের অনেক খেলোয়াড়ও এটি (পেনাল্টি) হয়তো চাননি।’
ম্যাচশেষে ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক বলেন, ‘ম্যাচ শেষ হতে না হতেই রেফারি ইংল্যান্ডের ড্রেসিং রুমের দিকে ছুটেছেন। এ থেকে চাইলে অনেক কিছু বোঝা যায়।’
ভিএআর বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা
ম্যাচের পর ভিএআর বিশেষজ্ঞ ডেল জনসন পেনাল্টি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, ডুমফ্রিসের বুটের নিচের স্পাইক সরাসরি কেইনকে আঘাত করেছে। এর ফলেই রেফারি বাস্টিয়ান ডানকেয়ার্ট তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন।
জনসন বলেন, ‘ডানকেয়ার্ট কেন পেনাল্টি দিলেন? তিনি ডুমফ্রিসের চ্যালেঞ্জের গতি প্রকৃতি লক্ষ করেছেন। বলে কিক করার চেষ্টার পরিবর্তে তিনি বুটের তলা উঁচু করেন, এটি বেপরোয়া চ্যালেঞ্জ। এ কারণেই তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি এমন এক পরিস্থিতি, যেখানে বলে শট নেওয়ার পর ডিফেন্ডার অ্যাটাকারকে আঘাত করলে তা যদি বিপজ্জনক বলে মনে হয়, তবে ঘটনাটিকে পেনাল্টি হিসেবে দেখা যেতে পারে।’
কেইন ব্যথায় কাতরাতে থাকার কারণেই ভিএআর রিভিউটি দেখেছে বলে মনে করেন জনসন। তবে বিতর্ক যতই হোক, শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ইংল্যান্ড। এর ফলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল।
আগামী রোববার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত একটায় বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের বিপক্ষে প্রথম ইউরো শিরোপার সন্ধানে মাঠে নামবে থ্রি লায়ন্স।
বিজ্ঞাপন