মঙ্গলবার , ২৯ জুলাই, ২০২৫ | ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:১৫ ২৮ জুলাই ২০২৫
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমন্বয়কদের চাঁদা দাবির খবর তাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবদলের গ্রাফিতি আর্টসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এক বছরেই এই অবস্থা! যে তরুণরা দেশ গঠন করবে, তারাই এখন চাঁদাবাজি করছে। আমরা কি এমন ভবিষ্যৎ চেয়েছিলাম?”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এত দ্রুত যদি অবক্ষয় শুরু হয়, তবে ভবিষ্যৎ কী? গোটা বাংলাদেশ এখন তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু এখন দুঃখ হয়, জোর গলায় বলতে পারছি না যে, এ দেশ নতুন করে গড়ে উঠবে। বরং এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, যা ফ্যাসিস্টদের জন্য আবার সুযোগ এনে দিতে পারে।”
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতির প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, “এক বছর পার হয়ে গেল। যারা প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের আজও কেন গ্রেফতার করা হলো না? হাসিনার বিচারের তো কিছুই দেখতে পেলাম না।”
বিএনপির সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “সংস্কারের বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বাস্তব অগ্রগতি নেই। বরং আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। তবে দেশের মানুষ জানে কিভাবে লড়াই করতে হয়। অতীতে যেমন লড়েছে, ভবিষ্যতেও লড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমান এখন চেষ্টা করছেন, কীভাবে বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলা যায়। এই লড়াইয়ে কোনো একটি দল বা ছাত্রসমাজ একা ছিল না। শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক, রিকশাচালক—সবার অংশগ্রহণেই জুলাই অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে সব শ্রেণির মানুষের মতামত গ্রহণ করতে হবে।”
তরুণ প্রজন্মের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তরুণদের দিকে এখন পুরো দেশ তাকিয়ে আছে। কিন্তু তাদের মধ্যেই যদি চাঁদাবাজি, লোভ, দুর্নীতি ঢুকে পড়ে, তবে গণতন্ত্রের স্বপ্ন আর উন্নত বাংলাদেশের আশা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। তাই এখনই আত্মসমালোচনার সময়।”
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে। নিজ দলের দিকেও তিনি কঠিন ভাষায় আত্মসমালোচনার বার্তা দিয়েছেন, যা রাজনীতির মাঠে নতুন বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন