বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০৪ ২৬ আগস্ট ২০২৪
বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে “বাংলাদেশের জাতীয় কবি” ঘোষণা করে অবিলম্বে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করতে অর্ন্তরবর্তিকালিন সরকারের প্রতি উদাত্ত্ব আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসাবে কাজী নজরুল ইসলামের নাম উচ্চারিত হলেও প্রকৃত অর্থে দু:খজনক হলেও সত্য যে, সরকারের কোনো আনুষ্ঠানিক দলিলপত্রে জাতীয় কবি হিসেবে তাঁর নাম নাই। স্বাধীনতা ৫৩ বছর পরও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ না করা শাসকগোষ্টির চরম ব্যার্থতা।’
সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃততে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবী জানান।
তারা বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আয়োজনে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে লেখা হলেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় আর্কাইভ, নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমির কোথাও কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণা করা সংক্রান্ত সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন বা অন্য কোনো দলিল পাওয়া যায়নি। যা জাতি হিসাবে অত্যান্ত লজ্জাজনক। লোকমুখে প্রচারিত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি, কাগজে-কলমে প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে নন।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারি আয়োজনে তাকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখও করা হয়। কিন্তু সবই পরোক্ষ স্বীকৃতি। এমন স্বীকৃতি কালের পরিবর্তনে মুছে যেতে পারে। আগামীর প্রজন্ম একদিন হয়তো না-ও জানতে পারে যে, আমাদের জাতীয় কবির নাম কাজী নজরুল ইসলাম।’
তারা আরো বলেন, ‘আমাদের জাতীয় প্রেরনার উৎস কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালীদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তিনি আমাদের রেনেসার অগ্রদূত ও ঐতিহ্যের রুপকার। তিনি আমাদের ইতিহাসের অংশ। ইতিহাস ও জাতীয় স্বীকৃতি কখনো অলিখিত থাকতে পারে না। অলিখিত ইতিহাস ও তথ্য সময়ের বিবর্তনে বিলিন হয়ে যায়। ’
নেতৃদ্বয় অবিলম্বে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের জন্য ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বলেন, ‘কাজী নজরুল আমাদের জাতিসত্তার অন্যতম রুপকার। স্বাধীনতার পথিকৃত, সামনে চলার প্রেরণা। যার রচনা আমাদের পথ দেখায়, অনাচার-অত্যাচার, জুলুম-পীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হতে আহ্বান জানায়।’
বাংলাদেশের প্রাণের কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা বলেন, ‘কাজী নজরুল আমাদের আত্মার শক্তি। যে কোনো বিচারে নজরুলের বিকল্প আমাদের নেই। তার কর্মময় জীবনের শিক্ষা আমাদের জাতীয় জীবনের শিক্ষা। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং কাজী নজরুল ইসলাম এক ও অবিভাজ্য। ’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, অত্যাচার, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে আপসহীন সাহসী কণ্ঠে সোচ্চার হয়ে কবি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গান, গল্প, সংগীত, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও অন্যান্য লেখা। আর সে কারণে ইংরেজ সরকার তাঁর গ্রন্থ’ ও রচনা বাজেয়াপ্ত করেছে এবং তাঁকে কারাদন্ডও দিয়েছে। কারাগারেও বিদ্রোহী নজরুল বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। টানা ৪০ দিন অনশন করে ব্রিটিশ সরকারের অন্যায়-অত্যাচার জেল-জুলুমের প্রতিবাদ করেছিলেন। কবি নজরুল একটি শোষণমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়ার জন্য লড়াই করে গেছেন। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি পূর্ণাঙ্গভাবে ভারতের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন।’
বিজ্ঞাপন