শনিবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৯ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দুদেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। দুইদিন আগে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে তার ছেলে ইমাম নিমেরি উপল সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থা “ক্রিটিক্যাল”।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। সপ্তাহে দুই দিন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করানো হয়। ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ডায়ালাইসিসের জন্য ভর্তি হন। তবে ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং বুধবার অবস্থার আরও অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, “ফরিদা পারভীনের কিডনি ও ব্রেইন কাজ করছে না, ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে, হার্টে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন দেখা দিয়েছে এবং শরীরে রক্তের সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে। রক্তচাপ কম থাকার কারণে ডায়ালাইসিস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, ফরিদা পারভীনের সার্বক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ছয় সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পর্যবেক্ষণ শেষে বলা যাবে শারীরিক অবস্থা কেমন দিকে যাচ্ছে।
ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম নিমেরি উপল বলেন, “ভেন্টিলেশনে রয়েছেন, এরপরও কোনো উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন, পরিস্থিতি সংকটাপন্ন।”
এর আগে ফরিদা পারভীনের স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম জানিয়েছেন, “গত কয়েক মাসে চারবার আইসিইউতে ভর্তি রাখতে হয়েছে। ফুসফুস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছেন, শরীর দুর্বল, উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই, হাঁটতেও পারছেন না। সবাই তাঁর জন্য দোয়া করবেন।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদা পারভীনের ফুসফুস, কিডনি, থাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতা রয়েছে।
ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীতের যাত্রা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে তিনি লালনসংগীতে তালিম নেন।
তার সংগীতজীবনের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান। এছাড়া ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন। শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষার জন্য ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামের একটি সংগীত বিদ্যালয়ও তিনি গড়ে তুলেছেন।
বিজ্ঞাপন