বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পাকিস্তানের নারী আম্পায়ার সালিমা ইমতিয়াজপিসিবি
প্রকাশিত: ০৮:২৯ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আইসিসির আন্তর্জাতিক আম্পায়ার ডেভলপমেন্ট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ইতিহাস গড়লেন সালিমা ইমতিয়াজ। এই প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রথম পাকিস্তানি নারী আম্পায়ার তিনি। মেয়েদের ক্রিকেটের খোঁজখবর যাঁরা রাখেন, সালিমা ইমতিয়াজ ও কাইনাত ইমতিয়াজ নাম দুটি তাঁদের কাছে পরিচিত মনে হওয়ার কথা। সম্পর্কে তাঁরা মা-মেয়ে।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নিশ্চিত করেছে যে, সালিমা ইমতিয়াজ আইসিসির আন্তর্জাতিক আম্পায়ার ডেভলপমেন্ট প্যানেলে যুক্ত হয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি নারীদের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ও আইসিসি ইভেন্টে ম্যাচ পরিচালনার যোগ্যতা অর্জন করলেন।
২০২২ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নারী এশিয়া কাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক হয় সালিমা। সেই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান দলের থাকা অলরাউন্ডার কাইনাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাকে অভিনন্দন জানালে দুজনের সম্পর্কটা ক্রিকেট বিশ্ব আরও ভালোভাবে জানতে পারে।
সেই সালিমা ইমতিয়াজ এবার ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন। পাকিস্তানের প্রথম নারী আম্পায়ার হিসেবে তিনি আইসিসির প্যানেলভুক্ত হলেন। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে যুক্ত হওয়ায় এখন থেকে আন্তর্জাতিক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ও আইসিসি ইভেন্টে ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন ৫২ বছর বয়সী এই আম্পায়ার। আজ রাতে মুলতানে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজেই আম্পায়ারিং করতে দেখা যাবে তাঁকে।
প্রথম পাকিস্তানি নারী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির প্যানেলভুক্ত হওয়ার খবরে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত সালিমা। এখন পর্যন্ত মেয়েদের ২২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারিং করা এই নারী পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমার এই যাত্রা কঠিন পরিশ্রম ও অনেক ত্যাগে পরিপূর্ণ। কিন্তু এখন নতুন অধ্যায়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। এটা শুধু আমার জয় নয়, এটা পাকিস্তানের প্রতিটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী নারী ক্রিকেটার ও আম্পায়ারের জয়।’
সালিমা আরও বলেন, ‘আমি আশা করছি, আমার এই সাফল্য অগণিত নারীকে অনুপ্রাণিত করবে, যারা খেলাধুলায় তাদের ছাপ রাখার স্বপ্ন দেখে। এটা ক্রিকেটে নারীদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং সেই উন্নয়নকে উৎসাহিত করার জন্য পিসিবির প্রতিশ্রুতিকেও প্রতিফলিত করবে।’
সালিমার মেয়ে কাইনাতের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ২০১০ সালে। ৩২ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার পাকিস্তানের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৯ ওয়ানডে ও ২১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। মেয়েই যে তাঁর অনুপ্রেরণা, তা জানিয়ে সালিমা বলেছেন, ‘২০১০ সালে পাকিস্তানের হয়ে কাইনাতের অভিষেক হওয়ার পর থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করব। যদিও এর আগে আমাকে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আমাকে সুযোগ দিয়েছিল, তবে আমার সবসময়ই আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ে ম্যাচ পরিচালনা করা।’
আজ পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম নারী টি-টোয়েন্টিতে কাইনাতকে অবশ্য মাঠে পাচ্ছেন না সালিমা। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় অনেক দিন হলো খেলা থেকে দূরে আছেন কাইনাত। তবে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে।
সালিমা প্রথম পাকিস্তানি নারী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির প্যানেলভুক্ত হলেও বাংলাদেশ এই সুখবর পেয়েছে আরও আগে। গত মার্চে প্রথমবারের মতো আইসিসির প্যানেলে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের চারজন নারী আম্পায়ার ও একজন ম্যাচ রেফারি। চার আম্পায়ার সাথিরা জাকির, রোকেয়া সুলতানা, ডলি রানি ও চম্পা চাকমা জায়গা পেয়েছেন আইসিসির ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে। আর সুপ্রিয়া রানিকে নেওয়া হয়েছে আইসিসি ম্যাচ রেফারিদের আন্তর্জাতিক প্যানেলে।
বিজ্ঞাপন