বুধবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ২৬ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:১৬ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শীর্ষ তিনটি পদে জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস)—এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে তাদের প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। ঘোষিত ফলাফলে ভিপি পদে মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৫৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট এবং শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৮১ ভোট।
জিএস পদে শিবির সমর্থিত প্রার্থী এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল সমর্থিত তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট এবং প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট।
এজিএস পদে জয়ী হয়েছেন মহিউদ্দিন খান। তিনি পেয়েছেন ৯ হাজার ৫০১ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ছাত্রদল সমর্থিত তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৪ হাজার ২৫৪ ভোট।
তবে সব হলে সমান ফলাফল হয়নি। ব্যতিক্রম ছিল জগন্নাথ হল। সেখানে ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম পান মাত্র ১০ ভোট, আর আবিদুল ইসলাম খান পান ১ হাজার ২৭৬ ভোট।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ডাকসু ও হল সংসদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৯১৫ জন এবং ছাত্রী ১৮ হাজার ৯৫৯ জন।
ডাকসুর ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪৭১ জন প্রার্থী। আর হল সংসদে ২৩৪টি পদের জন্য ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী লড়াই করেন। ফলে প্রতিটি ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে।
ভোটের হার ছিল উল্লেখযোগ্য। সূর্যসেন হলে সর্বোচ্চ ৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৮৭ শতাংশ, কবি জসীম উদ্দীন হলে ৮৬ শতাংশ এবং বিজয় একাত্তর হলে ৮৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়। তবে শামসুন নাহার হলে ভোট পড়েছে সবচেয়ে কম, মাত্র ৬৩.৬৭ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে শিবির সমর্থিত জোটের জয় ছাত্ররাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের দখলে থাকা নেতৃত্বের জায়গায় শিক্ষার্থীরা বিকল্প শক্তির দিকে ঝুঁকেছেন, যা ভবিষ্যতের জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিজ্ঞাপন