ডাকসু ভোটে আলোচনায় গণরুম ইস্যু

ডাকসু ভোটে আলোচনায় গণরুম ইস্যু

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:৩৬ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডাকসু নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই একটি প্রশ্ন ছাত্রদলকে বারবার শুনতে হচ্ছে—তারা ক্ষমতায় এলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও কি গণরুম–গেস্টরুম সংস্কৃতি ফিরে আসবে? এই প্রশ্নের জবাব নির্বাচনী ইশতেহারের প্রথম দফাতেই স্পষ্ট করেছে সংগঠনটি। ছাত্রদল বলছে, তারা গণরুম–গেস্টরুম, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দমন-পীড়নের মতো চর্চা চিরতরে বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে গিয়ে ছাত্রদলের প্রার্থীরাও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করছেন যে, অতীতের মতো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের সংস্কৃতি আর ফিরবে না। তবে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন প্রচার চালাচ্ছে, ছাত্রদল নির্বাচিত হলে ক্যাম্পাসে আবারও সেই সংস্কৃতি জেগে উঠতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন–সংকট থেকেই জন্ম নেয় গণরুমের প্রথা। যেখানে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হতো অনেক শিক্ষার্থীকে। অন্যদিকে গেস্টরুম সংস্কৃতিতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হতো। দীর্ঘ সময় ধরে যে দল ক্ষমতায় ছিল, সেই দলের ছাত্রসংগঠনের নেতারাই সাধারণত এই নির্যাতনে জড়িত থাকত।

জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর এই সংস্কৃতির অবসান ঘটে। এখন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—মানবাধিকার লঙ্ঘনের সেই প্রথা আর যেন কখনো ফিরে না আসে।

প্যানেল ঘোষণার আগে পিছিয়ে থাকলেও ঘোষণার পর সক্রিয়তায় গতি পেয়েছে ছাত্রদল। ১৯৯০ সালের ডাকসু নির্বাচনে তাদের প্যানেল জয়ী হয়েছিল। এবারের নির্বাচনে তারা সেই সময়ের পুনরাবৃত্তির আশা করছে।

প্রচারে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয়, আঞ্চলিক ভোট, নারী শিক্ষার্থীদের সমর্থন ও জগন্নাথ হলের ভোটকে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দেখছে সংগঠনটি। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান কুমিল্লার হওয়ায় সেই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সমর্থন আশা করছেন। জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম খুলনার হওয়ায় খুলনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভোট তাঁর ভরসা।

এই নির্বাচনে নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার, যা মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক। ছাত্রদল তাদের ইশতেহারে নিরাপদ ক্যাম্পাস, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, পোশাকের স্বাধীনতা ও ‘সান্ধ্য আইন’ বিলোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

জগন্নাথ হলে ২ হাজার ২২২ জন ভোটার রয়েছেন, যা মোট ভোটের প্রায় ৬ শতাংশ। ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় এই হলের শিক্ষার্থী। তাই এখানে ভালো ফল আশা করছে তারা।

ডাকসুর পাশাপাশি ১৮টি হলে ছাত্রদল প্যানেল ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ১৪টি হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল। নিজেদের মূল্যায়নে সংগঠনটি মনে করছে, কয়েকটি হলে তাদের প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। তবে কোথাও কোথাও প্রার্থীদের পরিচিতি ও ঐক্যের অভাব নিয়ে শিক্ষার্থীরা সংশয় প্রকাশ করেছেন।

অপপ্রচার মোকাবিলায় ছাত্রদলের নেতারা আত্মবিশ্বাসী। জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে আমরা মনে করি, এবারের ডাকসুতে নব্বইয়ের পুনরাবৃত্তি হবে। ছাত্রদল সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীর ম্যান্ডেট পাবে।”

বিজ্ঞাপন