চার গুরুতর অপরাধে চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে জারি হলো ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’

চার গুরুতর অপরাধে চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে জারি হলো ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:১৬ ২৫ মে ২০২৫

রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে চারটি গুরুতর অপরাধের জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের সরাসরি চাকরিচ্যুতির বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন। এরপরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এ উল্লেখযোগ্য সংশোধন আনা হয়েছে। সংশোধিত বিধানে বলা হয়েছে, চারটি নির্দিষ্ট অপরাধে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে সরকারি চাকরি থেকে সরাসরি বরখাস্ত করা যাবে—যাতে কোনো প্রকার বিভাগীয় তদন্ত বা দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন হবে না।

যে চারটি অপরাধে চাকরিচ্যুতি হবে:
১. রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকা
২. জননিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী অপরাধে জড়ানো
৩. দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া
৪. মানিলন্ডারিং বা জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়া

সরকার বলছে, এই অধ্যাদেশ জারির মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রশাসনে শৃঙ্খলা বজায় রাখা, দুর্নীতি প্রতিরোধ করা এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও ভাবমূর্তি রক্ষা করা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “সরকারি কর্মকর্তারা যাতে তাদের দায়িত্ব পালনে আরও সচেতন হন এবং আইন মেনে চলেন, সে জন্যই এ বিধান কঠোরভাবে কার্যকর করা হচ্ছে। যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করবেন কিংবা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

এদিকে, মানবাধিকার ও কর্মজীবী সংগঠনগুলো এই অধ্যাদেশ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কেউ কেউ একে সময়োপযোগী এবং দুর্নীতি দমনে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, এর অপপ্রয়োগের ঝুঁকি রয়েছে।

প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ নির্দেশনা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের আইনি পদক্ষেপের প্রয়োগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে নিরীহ কর্মকর্তারাও হয়রানির শিকার হতে পারেন। তারা সুপারিশ করেছেন, এই অধ্যাদেশের আওতায় গৃহীত প্রতিটি শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত যেন নিরপেক্ষ তদন্ত ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে হয়।

উল্লেখ্য, ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ কার্যকর হওয়ার পর এটি প্রথম বড় ধরনের সংশোধনী। সংশোধিত এই অধ্যাদেশটি এখন কার্যকর এবং পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে এটি বিল আকারে উপস্থাপন করা হবে।

বিজ্ঞাপন