শেষ হচ্ছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা, প্রস্তুত জেলেরা!

শেষ হচ্ছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা, প্রস্তুত জেলেরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৩:১৪ ৩০ এপ্রিল ২০২৫

দুই মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও নদীতে ফিরতে প্রস্তুত ভোলার দুই লক্ষাধিক জেলে। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মার্চ ও এপ্রিল—এই দুই মাস ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ ৩০ এপ্রিল, বুধবার দিবাগত রাত ১২টায়।

ভোলা জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলার সাত উপজেলায় ৫৪০টি অভিযান ও ৬০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি মামলায় দুই জেলেকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সদর উপজেলার ইলিশা চডার মাথা, ভোলারখাল, দৌলতখানের পাতারখাল ও চরফ্যাশনের সামরাজ মাছঘাটে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। কেউ জাল বুনছেন, কেউ ট্রলারের ইঞ্জিন মেরামত করছেন, আবার কেউ নদীতে নামার জন্য প্রস্তুত করছেন মাঝিমাল্লা। পুরো এলাকায় যেন উৎসবের আমেজ।

স্থানীয় জেলে মো. আব্দুল্লাহ মাঝি, সিরাজ মাঝি, নাগর মাঝি ও আবু তাহের বলেন, “আজ মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে। আমরা সরকারের নিয়ম মেনেই নদীতে যাইনি। এই দুই মাস পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। সরকারি সহায়তা খুবই সীমিত ছিল—শুধু চাল দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাকি প্রয়োজন মেটেনি। এখন মাছ ধরতে পারলে সেই কষ্ট দূর হবে।”

তাদের ভাষ্যে উঠে এসেছে আশার পাশাপাশি শঙ্কার কথাও। যদি নদীতে মাছ কম পড়ে, তাহলে ঋণ শোধ করা কঠিন হবে। অনেকেই বলেন, “দেনা করে ট্রলার ঠিক করেছি, জাল মেরামত করেছি। নদীতে মাছ না পেলে অনেক বিপদে পড়ব।”

অন্যদিকে আড়তদাররা বলছেন, অভিযান চলাকালে আড়ত বন্ধ ছিল। এখন আড়ত পরিষ্কার করে চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তাঁরা মোকাম থেকে দাদন এনে জেলেদের দিয়েছেন, এখন নদীতে মাছ ধরা শুরু হলে সেই দেনা পরিশোধ হবে বলে আশা করছেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, “মার্চ-এপ্রিলের এই নিষেধাজ্ঞা আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে, জাটকা বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করি এ বছর ইলিশের উৎপাদন ভালো হবে। সরকারি খাদ্য সহায়তাও জেলেদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোলায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশায় রয়েছে মৎস্য বিভাগ।

বিজ্ঞাপন