রবিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ছবি :সংগৃহীত
প্রকাশিত: ০৫:০৪ ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত হয়েছে, বিশেষ করে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের দপ্তর (OHCHR) সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে জানায়, আন্দোলন দমাতে সরকার অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে। এতে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থা একত্রে বিক্ষোভকারীদের ওপর অত্যাচার চালায়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার আন্দোলন দমাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গণগ্রেপ্তার, চিকিৎসাসেবায় বাধা সৃষ্টি, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ, সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ এবং নারী ও শিশুদের নির্যাতন করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের সদস্যরা অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে ছাত্রদের আক্রমণ চালায়, এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের যৌন সহিংসতা ও মারধরের শিকার হতে হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসাসেবা বাধাগ্রস্ত করা হয়। সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করা হয় এবং বিক্ষোভের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রচারের জন্য চাপ দেওয়া হয়। প্রায় ১৪০০ মানুষ নিহত এবং ১১ হাজার ৭০০ এরও বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে, যার মধ্যে অনেক শিশু ছিল।
এছাড়া, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে বিক্ষোভকারীদের চুপ করানোর চেষ্টা করা হয়। সরকার সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য গণমাধ্যমকেও হুমকি দেয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুরো চিত্র উঠে এসেছে এবং শেখ হাসিনার শাসনামলের বিভিন্ন দমনমূলক কর্মসূচির বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে এগুলোর প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে এই প্রতিবেদন।
এটি বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ববাসীর জন্য এক দুঃখজনক বাস্তবতা তুলে ধরে, যেখানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও গণতান্ত্রিক অধিকারকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন