২০০৫ সালে বাংলাদেশে সমকামী মিশন শুরু : অধ্যাপক সরোয়ার

২০০৫ সালে বাংলাদেশে সমকামী মিশন শুরু : অধ্যাপক সরোয়ার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মোরনিউজবিডি.কম
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মোরনিউজবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৪৩ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চাকরিতে কোটা সংস্কারের রায়ে প্রতিবন্ধীর সঙ্গে সুকৌশলে তৃতীয় লিঙ্গের অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে সমালোচনা করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) শিক্ষক অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেন।

তিনি বলেছেন, দুঃখজনক যে, কোটা সংস্কারের যে রায় দিলো সুপ্রিম কোর্ট সেখানে প্রতিবন্ধী কোটার সঙ্গে তৃতীয় লিঙ্গ যুক্ত করা হলো। কিন্তু আগে থেকেই ছিল প্রতিবন্ধী কোটা। তাহলে তৃতীয় লিঙ্গ শব্দ যুক্ত করা হলো কেন?

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত  ‘শিক্ষক সম্মেলন'২৪’ এ নিজের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রায়ে এই তৃতীয় লিঙ্গ শব্দটা যুক্ত করার কারণ কি? এটা কিন্তু আজকে নয়, এই সমকামিতার বিষয়টি ১৮৬৮ সাল থেকে শুরু। এটা সুকৌশলে যুক্ত করলো কারা আমরা সবাই জানি। আমি কোটার সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, কেউ বলতে পারেনি। বলেছে, স্যার আমরা তো এটা চাইনি। তাহলে কেন এই শব্দ কেন ব্যবহার করা হলো, তা বুঝতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরসহ বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্প নিয়ে প্রতিবাদ করে আলোচনায় আসেন অধ্যাপক সরোয়ার হোসেন। প্রথমে আইইউবি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে তাকে সরিয়ে রাখা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে তাকে ফেরানো হয়।

অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য শুরু করেন, সমকামিতা ইস্যু নিয়েই। পুরো বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশে সমকামিতার জাগরণ কীভাবে হচ্ছে, সুকৌশলে কীভাবে নানা শব্দে প্রমোট করা হচ্ছে তা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, যেই কর্মকাণ্ডের কারণে আল্লাহ একটি জাতিকে(কওমে লুত) ধ্বংস করেছেন সেই জাগরণ বাংলাদেশে সৃষ্টি বা ঘটতে যাচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। সেই জাগরণ বলতে পারেন হয়ে গেছে। প্রশ্ন হলো কীভাবে হলো? অনেকে বলবেন আমরা তো বুঝতেছি না।

তিনি আরও বলেন, সবাইকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, সমাজ, ইনক্লুসিভ সোসাইটির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমরা হয়ত জানি না, গত কয়েক বছরে ইনক্লুসিভ শব্দের ডেফিনেশনই চেঞ্জ হয়ে গেছে। জেন্ডার বলতে আমরা বুঝি ছেলে অথবা মেয়ে। জেন্ডার তো এখন একশটা। আর ইনক্লুসিভ শব্দটা আনা হয়েছে সমকামিতাকে বোঝানোর জন্যই। কোনো বিষয়ে ইনক্লুসিভ শব্দটা আসা মানে হচ্ছে সমকামিতা আছে।

সমকামিতাকে সামনে আনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বড় গুরু উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মনে করি অনেক মহান, আদর্শবান। অথচ যত ধর্মের শয়তানি তত্ত্ব আছে সব আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধ্যমে। তারা মাঠে রাজনীতি না করেও আসলে অন্তরালের সবচেয়ে বড় পলিটিশিয়ান।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, অ্যাপলের সিও ঘোষণা দিলেন তিনি গে। সেটা সেলিব্রেট করা হলো। আর বাংলাদেশি শিক্ষক সরোয়ার হোসেন যদি বলে আমি মুসলিম প্রফেসর, তাহলে জঙ্গি হয়ে যাচ্ছে। আর যে সমকামী, হোমো সেক্সুয়ালি এটা বললে সেলিব্রেট করা হচ্ছে। এতো তাড়াতাড়ি যে সব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে তাতো আমরা বুঝতে পারিনি।

নতুন সরকার নতুন বাংলাদেশেও নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমকামিতা নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য আমি নিজের জীবন নিয়ে ঝুঁকিতে। নতুন বাংলাদেশেও। আমি একা চলাফেরা করি না। এখানে এসেছি ছাত্রকে সঙ্গে নিয়ে৷ আমাকে জেলে নেবার অনেক চেষ্টা চলেছে।

তিনি বাংলাদেশি পাঠ্যপুস্তক সিলেবাসের সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দর্শনটা কী? আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পড়াশুনা করেন না, বই পড়েন না। একটা ছেলে মেয়ে হতে পারবে, মেয়ে ছেলে হতে পারবে। আমি সরোয়ার ফ্রক পড়লে মেয়ে হয়ে যাব? ইউএন, ডব্লিউএইচও সবাই এটাই প্রমোট করতেছে। কারিকুলামে শরিফ শরিফার গল্পে একটা শরিফা শব্দ ছিল। এ রকম আরও চারটা বই ছিল স্বাস্থ্য সুরক্ষার। এখন শুনতেছি এই সরকার নতুন করে সংস্কার করবে। আমি তো ভয় পেয়ে গেছি।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু ও পরিবেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ফান্ড আসে। এখানে একটা বাক্য আছে জেন্ডার-ইকুয়ালিটি। ব্র্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত ৭৭টা স্পন্সর আছে। ব্র্যাকের ২০টা প্রতিষ্ঠান পলিসিতে শতভাগ সমকামিতাবান্ধব। ডাইভার্সিটি, ইনক্লুসিভ ও জেন্ডারের সংজ্ঞা তারা লেখছে। বাংলাদেশে এই মিশন শুরু হয়েছে ২০০৫ সালে।

বিজ্ঞাপন