শনিবার , ২৪ মে, ২০২৫ | ৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:০৪ ২৩ মে ২০২৫
ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ভয়াবহ বজ্রপাত ও দমকা হাওয়াসহ ঝড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার ফলে বিভিন্ন জেলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকার জানায়, এই দুর্যোগে নিহতদের পরিবারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা প্রদানে জরুরি ভিত্তিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে দ্রুত জরিপ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার।
রাজ্যের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আগামী সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। বিশেষ করে মধ্য উত্তরপ্রদেশ ও তেরাই অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বজ্রপাত ও দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের যথাসম্ভব সতর্ক থাকতে এবং নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুধু মানুষের প্রাণই কাড়েনি, প্রাণ হারিয়েছে বহু নিরীহ পাখিও। ঝাঁসি জেলার সিংঘার গ্রামে ঝড়ের তাণ্ডবে একটি বিশাল পিপল গাছ ভেঙে পড়ে, যা ছিল অসংখ্য টিয়াপাখির আবাসস্থল। স্থানীয়রা জানান, ওই গাছটিতে বহু বছর ধরে টিয়াপাখিরা বসবাস করত। ঝড়ের সময় হঠাৎ গাছের বড় একটি ডাল ভেঙে পড়ে বহু পাখি আহত বা নিহত হয়।
ঝাঁসি জেলার বন কর্মকর্তা জে বি শেন্দে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৭০টি টিয়াপাখির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ৩০টি পাখি গুরুতর আহত অবস্থায় বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারাও শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রকৃতির এমন নির্মম রূপে মানুষ ও পশুপাখি সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ধরনের দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রয়োজন আগাম সতর্কতা, কার্যকর আবহাওয়া পূর্বাভাস ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি। একইসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ ও দুর্যোগ মোকাবেলায় নাগরিক সচেতনতাও এখন সময়ের দাবি।
বিজ্ঞাপন