বুধবার , ১৪ মে, ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:১১ ১৪ মে ২০২৫
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর জেলায় বিষাক্ত ও ভেজাল মদ পানে ২১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একই ঘটনায় আরও অন্তত ১০ জন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ তথ্য জানায়।
স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, অমৃতসরের অন্তত পাঁচটি গ্রামে একযোগে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা ‘মুনশাইন’ নামের এক ধরনের অপ্রমাণিত ও অবৈধ মদ পান করেছিলেন। এই মদের সঙ্গে বিষাক্ত মিথানল মিশ্রিত ছিল, যা মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বহু বছর ধরে ওই অঞ্চলে অনুমোদনহীনভাবে তৈরি এমন সস্তা মদ বাজারে চালু রয়েছে। এতে নেশার মাত্রা বাড়াতে মেশানো হয় প্রাণঘাতী মিথানল। এই রাসায়নিক নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি গ্রহণ করলে অন্ধত্ব, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
পাঞ্জাব পুলিশ ইতোমধ্যেই ১০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মূল হোতাসহ জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মাজিথা মহকুমার ডিএসপি অমোলক সিং এবং স্টেশন হাউস অফিসার অবতার সিংকে বরখাস্ত করেছে প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে নজরদারির অভাব ও মদের চোরাচালান বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে।
পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) গৌরব যাদব জানিয়েছেন, ঘটনার মূল অভিযুক্ত সাহেব সিং লুধিয়ানার একটি রাসায়নিক কারখানা থেকে মিথানল সংগ্রহ করেছিলেন বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই মিথানলই অবৈধ মদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
এ ঘটনায় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
উল্লেখ্য, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা আগেও ঘটেছে। গত বছর তামিলনাড়ুতে ‘মুনশাইন’ নামক একই ধরনের ভেজাল মদ পান করে অন্তত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়। তবুও স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় বারবার ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
বিজ্ঞাপন