মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও সড়কের খোয়া লুট, বিএনপি নেতাকে শোকজ

মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও সড়কের খোয়া লুট, বিএনপি নেতাকে শোকজ

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৯:২২ ৭ আগস্ট ২০২৫

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের খোয়া লুট এবং নদীর লিজ আয়ের টাকা আত্মসাৎসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে।

অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম টিপন মিয়া (৫০) উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি ওই ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মাঝপাড়া এলাকার মৃত হাজী আব্দুল করিমের (চান্দু মিয়া) ছেলে।

বুধবার (৬ আগস্ট) বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত সোমবার (৪ আগস্ট) টিপন মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে তাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দলীয় প্রভাব খাটিয়ে টিপন মিয়া মল্লিকপুর মাঝপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি হন। এরপর মসজিদের দান-অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি সিংধা ইউনিয়নের একটি নির্মাণাধীন সড়ক থেকে কয়েক গাড়ি ইটের খোয়া লুটের ঘটনাতেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। একইভাবে এলাকার নদীর লিজ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ নিজের কাছে রেখে গ্রামবাসীকে বঞ্চিত করেন তিনি।

মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি নিজাম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “টিপন নামাজ না পড়লেও ক্ষমতা দেখিয়ে মসজিদের সভাপতি হয়েছেন। এরপর তিন লাখ টাকায় লিজ হওয়া মসজিদের পুকুরটিও নিজের নামে লিজ নেন, কিন্তু কোনো অর্থ দেননি। দান ও অনুদানের টাকাও কোথায় খরচ হলো কেউ জানে না।”

টিপন মিয়ার ছোট ভাই মো. রুকন মিয়া বলেন, “আমার ১৪০ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে রেখেছে সে। জমিতে চাষ করতে দিচ্ছে না। চাঁদা না দিলে জমি ছাড়বে না বলে হুমকি দেয়। তার কারণে গ্রামে অশান্তি চলছে।”

সিংধা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম ইনচান বলেন, “দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, জমি দখল, সড়কের খোয়া লুট, নদীর টাকা আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত টিপন মিয়া। তার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।” এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত টিপন মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল বলেন, “টিপনের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর। দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো অপকর্ম বরদাশত করা হবে না। শোকজের জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “অপকর্ম করে কেউ দলীয় আশ্রয়ে পার পাবে না।”

বিজ্ঞাপন