বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৬ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বরগুনার আমতলীতে স্ত্রী নির্যাতন মামলায় জেলে যাওয়ার পরও বহালতবিয়তে প্রাথমিক বিদ্যালয় এক সহকারী শিক্ষক। তার নাম মো. কাওসার আহমেদ। তিনি আমতলী উপজেলার দক্ষিণ গুলিশাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন মামলার বাদী নাঈমা আক্তার ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফৌজদারি অপরাধে কোনো সরকারি কর্মকর্তা গ্রেফতার হলে আইন অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার কথা। কিন্তু এ শিক্ষক কারাগারে গেলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ওই কর্মকর্তা কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে এখন বাদিকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সহকারী শিক্ষক কাওসার আহমেদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী নাঈমা আক্তার যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮ এর (৩) ধারায় গত ১৮ মার্চ টাঙ্গাইল ঘাটাইল বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ মামলা করেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ২০১৫ - ২০১৬ সালে কাওসার ও নাঈমা অনার্সে ভর্তি হন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টে লেখা পড়ার সুবাদে পরস্পরের সাথে ভালবাসার সৃষ্টি হয়। ভালবাসাকে বাস্তবে রুপান্তরিত করার জন্য অবিভাবকদের সম্মতিক্রমে ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর বিশ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্যে রেজিঃ কাবিন মূলে পারিবারিক ভাবে মো. কাওসার ও নাঈমার বিয়ে হয়। বিয়েতে নাঈমার বাবা যৌতুক হিসেবে কাওসারকে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ০৩ ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার ও দামী প্রসাধনী সামগ্রী দেন। বিয়ের পর নাঈমা স্বামীগৃহে ঘরসংসার করতে শুরু করেন। এরপর নাঈমার গর্ভে নবজাতক শিশুর আবির্ভাব হয়। বাচ্চা নষ্ট করার জন্য কাওসার নাঈমাকে বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি সহ শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। নিরুপায় হয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাচ্চা নষ্ট করতে বাধ্য করা হয় নাঈমাকে। এছাড়াও বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ দশ লক্ষ টাকা আনার জন্য নানা ভাবে নির্যাতন শুরু করে। উক্ত যৌতুক টাকা দিতে অস্বীকার করিলে আমাকে মারধর করিয়া বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
নথি পর্যালোচনায় দেখাযায়, বিগত ১৬ মে স্ত্রী নির্যাতনকারী শিক্ষক কাওসার আহমেদ অভিযোগকারী স্ত্রী নাঈমার সাথে আপষের শর্তে অন্তবর্তীকালীন জামিন প্রদান করা হায়। স্ত্রী নির্যাতনকারী শিক্ষক কাওসার আহমেদ অভিযোগকারী স্ত্রী নাঈমার সাথে আপোষ করাবর মর্মে উল্লেখ করলেও স্ত্রী নাঈমার সাথে আপোাষ করে নাই। স্ত্রী নাঈমা আদালতে হাজির হয়ে আসামি জামিনে গিয়ে তার সাথে আপোষ করেনি মর্মে উল্লেখ করেন।একই সাথে জামিন বাতিলের দরখাস্ত করেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালত স্ত্রী নির্যাতনকারী শিক্ষক কাওসার আহমেদের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এবং আমি প্রতিবেদন আমার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দিয়েছি, এবং সেই শিক্ষকের প্রতিব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এবং আমি প্রতিবেদন আমার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিউল বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি, এবং বিধি অনুসারে তার উপরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন