বুধবার , ০৪ জুন, ২০২৫ | ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:১৫ ১ জুন ২০২৫
ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এটি ছিল এক বিস্ময়কর রাত। স্কোরবোর্ডে জ্বলজ্বল করছিল বাংলাদেশ দলের পাহাড়সম ১৯৬ রান। পারভেজ ইমন ও তানজিদ হাসানের ব্যাটে ভর করে মনে হচ্ছিল, এবার হয়তো সিরিজে সান্ত্বনার জয় নিয়ে ফিরবে টাইগাররা। কিন্তু কে জানত, মোহাম্মদ হারিসের এক ইনিংসেই বদলে যাবে পুরো দৃশ্যপট!
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন ইমন ও তানজিদ। ইমন ৩৪ বলে ৬৬ এবং তানজিদ ৩২ বলে ৪২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। এছাড়া হৃদয় ২৫ ও লিটন দাস ২২ রান করে দলের সংগ্রহ বাড়ান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৬ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে টাইগাররা। পাকিস্তানের হয়ে হাসান আলী ও আব্বাস আফ্রিদি ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
১৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান শুরুতেই ধাক্কা খায়। মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন সাহেবজাদা ফারহানকে। মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল, ম্যাচের রাশ বুঝি টাইগারদের হাতে। কিন্তু সেই আশা টিকলো না বেশিক্ষণ। সাইম আইয়ুব ও মোহাম্মদ হারিস মিলে গড়ে তোলেন ৯২ রানের বিধ্বংসী জুটি।
আইয়ুব ২৯ বলে ৪৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে বিদায় নিলেও, হারিস তখন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। মাত্র ৪৫ বলেই হাঁকান দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৬ বলে ৮টি চার ও ৭টি ছক্কায় গড়া অপরাজিত ১০৭ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস উপহার দেন। চারে নেমে মোহাম্মদ নওয়াজও খেলেন ১৩ বলে ২৬ রানের ঝড়ো ইনিংস। ম্যাচের শেষ দিকে অধিনায়ক সালমান আঘা অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ১৫ রানে।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মিরাজ ২টি উইকেট পেলেও, বাকি বোলাররা ছিলেন একেবারেই বিবর্ণ। হারিসের এমন তাণ্ডবের সামনে তারা প্রায় আত্মসমর্পণই করে বসেন। শেষ পর্যন্ত ১৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করে পাকিস্তান।
এই হারে লজ্জাজনকভাবে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ হারিসের ব্যাটিং যেন একাই ম্লান করে দিলো টাইগারদের সমস্ত প্রচেষ্টা। এ এক নাটকীয় ও বেদনাদায়ক পরাজয়, যা দীর্ঘদিন মনে রাখবে ক্রিকেট দুনিয়া।
বিজ্ঞাপন