তুরস্কের প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন: ‘টাইফুন ব্লক-৪’ দিয়ে নতুন যুগের সূচনা

তুরস্কের প্রথম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন: ‘টাইফুন ব্লক-৪’ দিয়ে নতুন যুগের সূচনা

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৩:২০ ২৪ জুলাই ২০২৫

তুরস্ক সামরিক প্রযুক্তিতে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছে। মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা মেলা ‘আইডিইএফ ২০২৫’-এ দেশটি প্রথমবারের মতো উন্মোচন করেছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘টাইফুন ব্লক-৪’। তুরস্কের শীর্ষ প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠান রোকেটসান ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রদর্শন করে। এটি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বা তারও বেশি গতিসম্পন্ন এবং তুরস্কের সর্বাধিক পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রোকেটসানের তথ্য অনুযায়ী, টাইফুন ব্লক-৪ এর ওজন সাত টনেরও বেশি এবং এটি বহুমুখী ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্র কৌশলগত বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু— যেমন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সামরিক হ্যাঙ্গার, কমান্ড সেন্টার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে পারে। এটি আঙ্কারার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবেও তুরস্ককে এগিয়ে নেবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

প্রতিরক্ষা মেলায় শুধু টাইফুন নয়, আরও কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তিও উন্মোচন করেছে তুরস্ক। এর মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ‘আতমাকা’ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ, যার পাল্লা ২৫০ কিলোমিটারের বেশি। এটি সমুদ্র প্রতিরক্ষার জন্য ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ নীতির আওতায় ব্যবহৃত হবে। এছাড়া গোকবোরা নামের একটি বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রও প্রদর্শিত হয়েছে, যার পাল্লা প্রায় ১০০ নটিক্যাল মাইল। এটি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন উভয় প্ল্যাটফর্ম থেকেই উৎক্ষেপণযোগ্য।

এছাড়া, ‘এরেন’ নামে একটি উচ্চ-গতির লোটারিং যুদ্ধাস্ত্রও মেলায় প্রদর্শন করেছে রোকেটসান। এটি ইউএভি, হেলিকপ্টার, স্থল যান ও নৌ-প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য এবং ১০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লা ও উন্নত নির্দেশনা প্রযুক্তি দ্বারা সজ্জিত।

ইস্তাম্বুল ফেয়ার সেন্টার, আতাতুর্ক বিমানবন্দর, ডব্লিউওডব্লিউ হোটেল ও আতাকয় মেরিনায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আয়োজিত আইডিইএফ ২০২৫-এ এবার অংশ নিচ্ছে ৯০০টির বেশি দেশীয় ও ৪০০টি বিদেশি প্রতিরক্ষা কোম্পানি। মেলায় তুরস্কের এই প্রযুক্তি অর্জন তাকে বিশ্ব প্রতিরক্ষা শিল্পের কেন্দ্রবিন্দুর দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য যে, মুসলিম বিশ্বের মধ্যে এতদিন শুধু ইরান ও পাকিস্তান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছিল। এবার সেই তালিকায় তৃতীয় দেশ হিসেবে যুক্ত হলো তুরস্ক, যা মুসলিম বিশ্বে সামরিক প্রযুক্তির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল।

বিজ্ঞাপন