শুক্রবার , ২৫ জুলাই, ২০২৫ | ১০ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:০৬ ২৪ জুলাই ২০২৫
ওমান উপসাগরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইরানি বাহিনীর দাবি, তাদের আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। তবে ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারির পর সেটি পথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।
ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ১০টার দিকে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ইউএসএস ফিটজজেরাল্ড নামক মার্কিন ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে যায়, যখন জাহাজটি ‘ইরানের তত্ত্বাবধানে থাকা জলসীমায়’ প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
উভয় পক্ষই একে অপরকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। তবে ইরানি হেলিকপ্টারের পাইলট বারবার মার্কিন জাহাজটিকে সরাসরি সতর্ক করে জানায়, তারা যেন ইরানের জলসীমা ত্যাগ করে। ভিডিও প্রমাণসহ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন যুদ্ধজাহাজটি শেষ পর্যন্ত পিছু হটে এবং দক্ষিণ দিকে পথ পরিবর্তন করে।
তবে মার্কিন নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধজাহাজটি ইরানি সেনাদের নির্দেশে পথ পরিবর্তন করলেও সেটি পরবর্তীতে কোন জলসীমায় প্রবেশ করেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ঘটনার পেছনে বর্তমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়া রয়েছে। মাত্র এক মাস আগেই, ২২ জুন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
ইরান অতীতেও এ ধরনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ২০২৩ সালে ইরানি বাহিনী দাবি করেছিল, তারা হরমুজ প্রণালির কাছে একটি মার্কিন সাবমেরিনকে পানির ওপরে উঠতে বাধ্য করেছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন সে দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ওমান উপসাগর ও পারস্য উপসাগর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ হওয়ায় সেখানে এ ধরনের সংঘাত বিশ্ব রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সাম্প্রতিক এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানি মিডিয়া যুদ্ধজাহাজটির নাম উল্লেখ করেছে ‘ডিডিজি ফিটজজেরাল্ড’ হিসেবে এবং দাবি করেছে, ইরানি বাহিনী স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছিল দক্ষিণ দিকে সরে যেতে।
দুই দেশের মধ্যে এমন সামরিক মুখোমুখি অবস্থান ভবিষ্যতে আরও জটিল পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের।
বিজ্ঞাপন