সোমবার , ২৩ জুন, ২০২৫ | ৯ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:১৯ ২২ জুন ২০২৫
পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিলো ইরানের পার্লামেন্ট। রোববার বিকেলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক খবরে জানানো হয়, পার্লামেন্টে উত্থাপিত প্রস্তাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা পরিষদের ওপর।
বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি পরিবহন রুটগুলোর একটি হরমুজ প্রণালী। ইরানের উপকূলঘেঁষা এই জলপথ দিয়েই বিশ্ববাজারে মোট তেল ও গ্যাস সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবাহিত হয়। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বৃহৎ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এই পথ ব্যবহার করে তাদের রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
প্রণালীটি বন্ধ হলে তা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তেলের সরবরাহ ব্যাহত হলে বিশ্ববাজারে হঠাৎ দাম বাড়তে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি পারস্য উপসাগরে অবস্থানরত মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোর চলাচলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ইসমাইল কোসারি বার্তা সংস্থা ইয়াং জার্নালিস্ট ক্লাবকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি আমাদের জাতীয় অ্যাজেন্ডায় রয়েছে। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা এই পদক্ষেপ নেব।”
এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের পর। শনিবার গভীর রাতে চালানো এই অভিযানে ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে ব্যাপকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেন মার্কিন জেনারেল ড্যান কেইন। তিনি জানান, অভিযানে মার্কিন বাহিনী সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করেছে এবং ইরান কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সরাসরি সামরিক সংঘাতে গড়ানোর ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। ইরান যদি সত্যিই হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তবে তা শুধু জ্বালানি নয়, বরং সমগ্র বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।
বিজ্ঞাপন