সালমান এফ রহমানের ছেলে-ভাতিজার ১,৪৭৯ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করল যুক্তরাজ্য

সালমান এফ রহমানের ছেলে-ভাতিজার ১,৪৭৯ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করল যুক্তরাজ্য

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:০৮ ২৪ মে ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও তার চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন বিলাসবহুল দুটি স্থাবর সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।

লন্ডনের গ্রোসভেনর স্কোয়ার এবং গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত এই দুই সম্পত্তির যৌথ মূল্য প্রায় ৭.৭ মিলিয়ন পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং দ্য গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

৯টি ফ্রিজিং অর্ডার: বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, এনসিএ মোট ৯টি ফ্রিজিং অর্ডার জারি করেছে। এসব আদেশের আওতায় আহমেদ শায়ান ও আহমেদ শাহরিয়ার তাদের সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের অনুমতি পাবেন না।

কম্পানিজ হাউসের নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, জব্দকৃত সম্পত্তিগুলো ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, আইল অব ম্যান এবং জার্সি ভিত্তিক অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছে। এসব সম্পত্তির দাম ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড থেকে শুরু করে ৩৫.৫ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত।

শেখ রেহানার পুরোনো বাসভবনও জব্দ
জব্দকৃত একটি সম্পত্তি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত, যেখানে এক সময় শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা বসবাস করতেন বলে জানিয়েছে ফিনান্সিয়াল টাইমস।

এই দুটি স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ধরা হয়েছে ৭.৭ মিলিয়ন পাউন্ড।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা
বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার এবং শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিক এরই মধ্যে সিটি মিনিস্টার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য
সংশ্লিষ্ট দুই ভাইয়ের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনও মন্তব্য পাওয়া না গেলেও আহমেদ শায়ান রহমানের একজন মুখপাত্র ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেন,

“আমাদের মক্কেল দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন যে তিনি কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি অবশ্যই যুক্তরাজ্যের যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করবেন।”

তারা আরও বলেন,

“বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হচ্ছে। আমরা আশা করি যুক্তরাজ্য এসব বিষয় বিবেচনায় নেবে।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর পলিসি ডিরেক্টর ডানকান হেমস বলেন,

“আমরা যুক্তরাজ্যের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে উৎসাহ দিচ্ছি যাতে তারা বিলম্ব না করে এসব সন্দেহজনক সম্পত্তি পুরোপুরি জব্দ করে।”

এনসিএর একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, “চলমান একটি দেওয়ানি তদন্তের অংশ হিসেবে ফ্রিজিং অর্ডার জারি করা হয়েছে।”

সূত্র: The Guardian, Financial Times

বিজ্ঞাপন