মঙ্গলবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৮:৩৪ ২৯ এপ্রিল ২০২৫
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ দেশবাসীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আগামী দু’তিন দিনের মধ্যেই যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ভারতের সামরিক হামলা আসন্ন,”—এই মন্তব্যের পর থেকেই পাকিস্তানজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
পরে পাকিস্তানের দুটি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম, জিও নিউজ এবং সামা টিভি, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আগামী দু’তিন দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সত্যিই কিছু ঘটে কিংবা শুরু হয়, তাহলে তা এই সময়ের মধ্যেই হবে। আর যদি না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে আমরা একটি বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি।”
সামা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “এই অঞ্চলে একটি যুদ্ধের আশঙ্কা এখন প্রবল। সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।”
এই উত্তেজনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে। ওই দিন ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট পর্যটকদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে চালানো এই হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যাঁরা সবাই পুরুষ। আহত হন আরও অনেকেই। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
এই ঘটনার পর ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন কূটনৈতিক এবং নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, সীমান্তে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক বার্তা বিনিময় এই উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও তাদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধ করার হুমকি দেয় এবং সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে।
গত তিন দিন ধরে কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে। এতে ইতিমধ্যে উভয় পক্ষেই প্রাণহানি ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এই পটভূমিতেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের এই সতর্কবার্তা যুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও উসকে দিয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তার জন্য এখন চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছে দুই দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক মহল।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন