মঙ্গলবার , ২২ জুলাই, ২০২৫ | ৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:০৫ ২২ জুলাই ২০২৫
জাতীয় দুর্যোগের মুহূর্তে যখন দেশের শতাধিক মানুষ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, তখন দেশের বার্ন চিকিৎসার পথিকৃৎ অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনের অনুপস্থিতি মানুষকে বিস্মিত করছে। যিনি নিজেই এই চিকিৎসা শাখার ভিত গড়ে তুলেছেন, যিনি বহু আন্তর্জাতিক প্রশংসা পেয়েছেন, সেই মানুষটিই এখন আত্মগোপনে! দেশের সবচেয়ে বড় বার্ন দুর্ঘটনার সময় তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। অথচ এমন মুহূর্তে তার উপস্থিতি ও নেতৃত্ব অনেক প্রাণ বাঁচাতে পারত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, সাম্প্রতিক সময়ে ডা. সামন্ত লাল নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। রাজনৈতিক পরিচয়ে সুবিধা নেওয়া, দলীয় পদে থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা কাজে নিরপেক্ষ থাকার দাবি, এমনকি প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এখন যখন জাতি তাকে দায়িত্ব পালনে দেখতে চায়, তখন তিনি নিঃশব্দ। তিনি কী শুধু সম্মানের আশ্রয়ে থেকেছেন? নাকি রাজনৈতিক ঝুঁকি এড়াতে নিজেই সরে গেছেন? এই প্রশ্ন আজ জনমনে।
অনেকেই বলছেন, যদি সত্যিই তিনি নির্দোষ হন, তাহলে সামনে এসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুন। কিন্তু তিনি না কারও সামনে আসছেন, না কোনো বিবৃতি দিচ্ছেন। ফেসবুকজুড়ে গুজব—তিনি গ্রেপ্তার, বা তিনি বিদেশে, আবার কেউ বলছেন তিনি নিজ বাসায় আছেন। কিন্তু এসবের কোনো সত্যতা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য আসেনি।
এই নিরবতা এবং পালিয়ে থাকার আচরণ একজন দায়িত্বশীল চিকিৎসকের সঙ্গে যায় না। বরং এতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। যিনি বার্ন ইউনিট গড়ে তুলেছেন, তার পক্ষেই কি এমন সংকটে পিছু হটে যাওয়া মানায়? নাকি তার অতীত সব অবদান এখন শুধুই স্মৃতি?
জনগণ আজ প্রশ্ন তুলছে—ডা. সামন্ত লাল কি একজন দায়িত্ববান চিকিৎসক, নাকি সুবিধাবাদী একজন সুযোগসন্ধানী? তিনি কি নিজের সম্মান রক্ষায় ব্যস্ত, না কি এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে সত্যিকারের চিকিৎসকের ভূমিকা পালনে অপারগ? একজন জাতীয় সম্পদকেও যদি রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপনে যেতে হয়, তাহলে এ রাষ্ট্রযন্ত্র ও নেতৃত্ব কতটা ব্যর্থ তা কি বলার অপেক্ষা রাখে?
বিজ্ঞাপন