রবিবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৮:৪৩ ২৭ এপ্রিল ২০২৫
আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে নিজ হাতে নির্মিত নৌকা ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবু ছাইদ শিকদার। প্রায় ৩০ বছর ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামে আবু ছাইদ শিকদারের বাড়ির সামনে পুকুরপাড়ে স্থাপিত দৃষ্টিনন্দন নৌকা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়। এ সময় তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং ভাস্কর্য ভাঙার নির্দেশনা দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আবু ছাইদ শিকদার নিজ উদ্যোগে ও নিজ খরচে বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ে নৌকা আকৃতির একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। সেই নৌকা ছিল তার রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত থাকার প্রতীক। তবে সম্প্রতি রাজনৈতিক মতাদর্শে পরিবর্তন আসায় তিনি নিজেই তা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
এ ঘটনায় পুরো কোটালীপাড়া উপজেলায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা কাজী মুক্তা বলেন,
“আবু ছাইদ শিকদার দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তার মামা, প্রয়াত সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লার প্রভাবের কারণে তিনি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এরপর চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি ব্যাপক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন আওয়ামী লীগের সংকটের সময় তিনি দল ছাড়ছেন — আমরা তার এই কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
এ প্রসঙ্গে আবু ছাইদ শিকদার সাংবাদিকদের বলেন,
“যার দল করি, সে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পালিয়ে গেছে। আদর্শচ্যুত হয়ে পালিয়েছে। আমি আর ওই দলে থাকবো না। তাই নিজ হাতে নির্মিত নৌকার ভাস্কর্যও ভেঙে ফেলেছি।”
তিনি আরও স্পষ্টভাবে জানান,
“আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখবো না। সেই কারণেই নৌকার প্রতীকী ভাস্কর্যটিও সরিয়ে দিয়েছি।”
এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে রাজনৈতিক নেতাদের আদর্শচ্যুতির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন আবু ছাইদ শিকদার।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন