টিআইএন আছে কিন্তু রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের জন্য আসছে কঠোর নির্দেশনা!

টিআইএন আছে কিন্তু রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের জন্য আসছে কঠোর নির্দেশনা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৪:১২ ১৫ জুলাই ২০২৫

ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) থাকা সত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খান নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, "যারা রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে।" কর আদায় বাড়াতে কর কর্মকর্তাদের জনবল ও সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি।

চেয়ারম্যান জানান, দেশে প্রায় এক কোটি টিআইএনধারী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭২ লাখ আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না এবং আরও প্রায় ৩০ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেও কর পরিশোধ করেন না। এই বিশাল সংখ্যক নন-ফাইলার ও কর পরিশোধ না করা টিআইএনধারীদের করের আওতায় আনা হবে আগামী কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য। তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে।

এই প্রসঙ্গে তিনি সোমবার আয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জুলাই মাসের আয়কর রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। সভায় ঢাকার কর কমিশনার, মহাপরিচালক, প্রথম ও দ্বিতীয় সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন এবং ঢাকার বাইরের কর কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান কর কর্মকর্তাদের জরিপ এবং স্পট এসেসমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেন, যাতে নতুন করদাতাদের চিহ্নিত করে করজাল বিস্তৃত করা যায়। পাশাপাশি কর অঞ্চলভিত্তিক বকেয়া কর আদায়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে যেখানে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন তিনি।

কর ফাইল স্থানান্তর নিয়েও চেয়ারম্যান কঠোর বার্তা দেন। তিনি বলেন, "করদাতারা যেন হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য চলতি মাসের মধ্যেই সকল আয়কর ফাইল যথাযথ কর অঞ্চলে স্থানান্তর সম্পন্ন করতে হবে।" এ বিষয়ে কর কর্মকর্তাদের আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অডিট সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "অডিটের লক্ষ্য কর আদায় নয়, বরং কর ফাঁকি প্রতিরোধ এবং কর সংস্কৃতির উন্নয়ন।" অডিট সিলেকশন পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে, যাতে কোনো মানবিক প্রভাব না পড়ে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এনবিআর সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, আয় ও সম্পদের বৈষম্য কমিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহে আয়করের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআরের মোট রাজস্ব আদায়ের তুলনায় আয়করের অংশ বেড়ে না গিয়ে কিছুটা কমেছে।

সভায় আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট, সিআইসি মহাপরিচালকসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সবাই মিলে নন-ফাইলার শনাক্তকরণ, করজাল সম্প্রসারণ এবং বকেয়া কর আদায়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

চেয়ারম্যানের এই নির্দেশনা এবং দিকনির্দেশনা আয়কর সংস্কৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়োপযোগী এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব আদায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাবে এবং একটি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন