Sorry, you have been blocked

You are unable to access thailand-u31.com

Why have I been blocked?

This website is using a security service to protect itself from online attacks. The action you just performed triggered the security solution. There are several actions that could trigger this block including submitting a certain word or phrase, a SQL command or malformed data.

What can I do to resolve this?

You can email the site owner to let them know you were blocked. Please include what you were doing when this page came up and the Cloudflare Ray ID found at the bottom of this page.

দুর্গাপূজায় কেন ট্রাম্পকে অসুর হিসেবে উপস্থাপন করা হলো

দুর্গাপূজায় কেন ট্রাম্পকে অসুর হিসেবে উপস্থাপন করা হলো

দুর্গাপূজায় কেন ট্রাম্পকে অসুর হিসেবে উপস্থাপন করা হলো

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ১০:০৭ ৯ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে দুর্গাপূজার এক মণ্ডপে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘অসুর’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে—এমন দৃশ্যই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সিংহের পিঠে বসে আছেন দেবী দুর্গা, হাতে দেবতাদের দেওয়া অস্ত্র, আর তাঁর নিশানা সেই অসুর—যার চেহারা, গঠন ও স্বর্ণাভ চুল ট্রাম্পের মতোই। গত সপ্তাহে মুর্শিদাবাদে উন্মোচিত হয় এই অসুররূপী ভাস্কর্যটি। আয়োজক কমিটির সদস্য সঞ্জয় বসাক জানান, এটি শুধুমাত্র একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং একটি প্রতীকী প্রতিবাদ—যেখানে ট্রাম্পকে ‘অশুভ শক্তি’র প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আগে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো ছিল। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে, আমাদের নিচে নামানোর চেষ্টা করছে। তাই তাঁকে অসুর হিসেবে দেখানো হয়েছে, যাকে পরাস্ত করেছেন শক্তিশালী মা দুর্গা।”

দুর্গাপূজা শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়—এটি বাঙালির শিল্প, সংস্কৃতি ও সামাজিক প্রতিফলনের অন্যতম বড় মাধ্যম। প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের নানা মণ্ডপে সমসাময়িক ঘটনা, সামাজিক সংকট বা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রতীক তুলে ধরা হয়। ২০২০ সালে এক মণ্ডপে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে ‘অসুর’ রূপে দেখানো হয়েছিল, যখন ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত তীব্র হয়। এবার সেই ধারাবাহিকতায় ট্রাম্পকে অসুর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাঙালি সংস্কৃতি বিশ্লেষক সুশোভন সিরকার বলেন, “যেভাবে ৯/১১-এর পর ওসামা বিন লাদেন জনপ্রিয় আলোচনার বিষয় ছিল, তেমনি এবার ট্রাম্প আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিতর্কিত চরিত্র হয়ে উঠেছেন। সেই প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে দুর্গাপূজার মণ্ডপে।”

২০১৯ সালে ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে, ‘হাউডি মোদি!’ র‍্যালিতে। ৫০ হাজার মানুষ তখন দুই নেতাকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিলেন। পরের বছর ‘নমস্তে ট্রাম্প’ নামে গুজরাটেও এমন আয়োজন হয়। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ভারতের পণ্যের ওপর ৫০% পর্যন্ত উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়, ভারতীয় অর্থনীতিকে ট্রাম্প আখ্যা দেন ‘মৃত’ অর্থনীতি হিসেবে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে নিন্দা ও চাপ প্রয়োগ শুরু করে। এমনকি এক পর্যায়ে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা রাশিয়ার যুদ্ধকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলেও মন্তব্য করেন। ভারত এসব মন্তব্যকে “ভুল ও বিভ্রান্তিকর” বলে প্রত্যাখ্যান করে।

গত সেপ্টেম্বর ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ ঘোষণা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে ইচ্ছুক বিদেশিদের জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসার ফি এক লাখ ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে। অনেকে একে ভারতীয়দের প্রতি সরাসরি ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেন, কারণ এই কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী ছিল ভারতীয় নাগরিকরা। কলকাতার বাসিন্দা তুনির মুখার্জি বলেন, “এই মণ্ডপ শুধু ধর্মীয় শিল্প নয়; এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা। এখানে ট্রাম্পকে অসুর হিসেবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে বলা হয়েছে—তাঁর নীতি, ক্ষমতার ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক আচরণ এখন অশুভ শক্তির রূপ নিয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “বাঙালি সংস্কৃতিতে শিল্প ও রাজনীতি আলাদা নয়। ট্রাম্পকে অসুর দেখানো মানে আধুনিক যুগের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেবী দুর্গার লড়াইয়ের প্রতীক।”

মণ্ডপটির আয়োজকরা জানান, এই সৃজনশীল কাজটি তিন মাস ধরে সম্পূর্ণ গোপনীয়ভাবে প্রস্তুত করা হয়। উন্মোচনের আগে যেন কৌতূহল ও আকর্ষণ তৈরি হয়, সেটিই ছিল তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। সঞ্জয় বসাক বলেন, “আমরা চাই মানুষ ভাবুক, আলোচনায় আসুক। দেবী দুর্গা সব সময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক—আজও সেই প্রতীক বর্তমান।” ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজার এই প্রতীকী শিল্পকর্ম এখন আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয়। কেউ একে সাহসী শিল্পীসত্তার প্রকাশ বলছেন, কেউ আবার রাজনৈতিক বিতর্ক বলে সমালোচনা করছেন। কিন্তু একথা স্পষ্ট—মা দুর্গা ও অসুরের যুদ্ধ এবার কেবল পৌরাণিক নয়, বরং বাস্তব বিশ্বের ক্ষমতা, নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক নতুন সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের প্রতিচ্ছবি।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/