শনিবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:২৫ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে ছয়টি দেশে একযোগে সামরিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, কাতার ও ইয়েমেনের অভ্যন্তরে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন, আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
সবচেয়ে আলোচিত হামলাটি ঘটে মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায়। গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলাকালে হামাসের একটি অফিসে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে নিহত হন অন্তত ৬ জন, যাদের মধ্যে ছিলেন হামাসের শীর্ষ নেতা খলিল আল-হাইয়ার ছেলে হুমাম আল-হাইয়া, তার তিন দেহরক্ষী এবং এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা। তবে হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব অক্ষত রয়েছেন।
এতে কাতার ২০২৫ সালে সপ্তম দেশ হিসেবে ইসরায়েলি আক্রমণের শিকার হলো। এর আগে গাজা উপত্যকায় টানা বিমান হামলায় শুধু সোমবারেই ৬৭ জন নিহত এবং ৩২০ জন আহত হন। পরদিন মঙ্গলবার আরও ৮৩ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে বহু বেসামরিক মানুষও ছিলেন।
একই দিনে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান লেবাননের বেকা ও হারমেল জেলায় হামলা চালায়, এতে পাঁচজন নিহত হন। ইসরায়েল দাবি করে, হিজবুল্লাহর অস্ত্র গুদাম ও সামরিক স্থাপনা ছিল লক্ষ্যবস্তু। যদিও ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, তারপরও লেবাননের ভেতরে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
এছাড়া সোমবার রাতভর সিরিয়ার হোমস ও লাতাকিয়ায় একাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে দেশটির সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে আখ্যা দিয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকার পতনের পর থেকে সিরিয়ায় ইসরায়েলি আগ্রাসন আরও বেড়েছে।
তিউনিসিয়ার সিদি বো সাইদ বন্দরে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রধান জাহাজ ফ্যামিলি বোটে সোমবার রাতে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে গেলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে গাজামুখী নৌবহরে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে বুধবার ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও আল-জাওফ প্রদেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং ১৩১ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে একাধিক সাংবাদিকও ছিলেন বলে জানিয়েছে ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের মতে, মাত্র তিন দিনে ছয় দেশে ইসরায়েলের সামরিক হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতাকে নতুন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যা আগামীতে আরও ভয়াবহ সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।
বিজ্ঞাপন