মঙ্গলবার , ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১৮ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:২৪ ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে এক সময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের জুনে একটি ফোনালাপ থেকেই সেই সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়। পরে তা পরিণত হয় প্রকাশ্য দূরত্বে।
ফোনালাপে ট্রাম্প বারবার দাবি করেন, তিনি ভারত–পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রেখেছেন। এমনকি তিনি জানান, পাকিস্তান তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিচ্ছে। নিজের প্রচেষ্টাকে সম্মানজনক মনে করে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন—ভারতেরও উচিত তাঁকে সমর্থন করা।
কিন্তু মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারত–পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অস্ত্রবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। বিষয়টি দুই দেশ সরাসরি সমাধান করেছে। ট্রাম্প এই বক্তব্য মানতে নারাজ ছিলেন। এখান থেকেই শুরু হয় দুই নেতার মধ্যে দূরত্ব।
একসময় ট্রাম্পকে ‘সত্যিকারের বন্ধু’ বললেও, এই ঘটনার পর মোদি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। এর কিছুদিন পরই ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। ফলে চলমান বাণিজ্য আলোচনাও ভেস্তে যায়।
ট্রাম্প প্রথমে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ভারতের কোয়াড সম্মেলনে অংশ নেবেন। কিন্তু পরে সফর বাতিল করেন। এ সিদ্ধান্তে নয়াদিল্লির অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। ভারতের কিছু মহল এমনকি ট্রাম্পকে ‘জাতীয় অপমান’ বলেও আখ্যায়িত করেছে। মহারাষ্ট্রে একটি উৎসবে তাঁর বিশাল পুতুল তৈরি করে তাতে লেখা হয়—‘পিঠে ছুরিকাঘাতকারী’।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা কথা বলেছেন। তাঁদের মতে, ট্রাম্পের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি মোদিকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। আর সেখান থেকেই দুই নেতার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
ট্রাম্প ও মোদি দুজনই জনতুষ্টিমূলক রাজনীতির প্রবক্তা। দুজনেরই স্বভাব তেজস্বী ও আত্মকেন্দ্রিক। বিশ্লেষকদের মতে, তাঁদের এই প্রবণতাই পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিজ্ঞাপন