সোমবার , ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১৭ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:০৮ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশে নগদ লেনদেন বা টাকা ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার ৮ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটলেও এখনো নগদের ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি, যার কারণে এই বিপুল ক্ষতি হচ্ছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল লেনদেন কেবল খরচই কমাবে না, বরং অর্থনীতির স্বচ্ছতা ও প্রবৃদ্ধিও বাড়াবে। তবে এজন্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) ক্যাশ আউট খরচ কমানো জরুরি। প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ভুটানের তুলনায় বাংলাদেশে ক্যাশ আউট খরচ অনেক বেশি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রায় ৪৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (প্রায় ৩ কোটি) এখনো ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে। অথচ বিকাশের ২ কোটি ১২ লাখ ও নগদের ৪৫ লাখ ব্যবহারকারী প্রমাণ করছে, প্রযুক্তি কীভাবে গ্রামীণ জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারছে। বর্তমানে দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে, যেখানে মোবাইল মানি বিশেষভাবে নারীদের ও নিম্ন আয়ের পরিবারকে ক্ষমতায়িত করছে।
বাংলাদেশের ফিনটেক খাতে বর্তমানে ৩৩২টি কোম্পানি কাজ করছে। এর মধ্যে ২৬টি ইতোমধ্যে বিনিয়োগ পেয়েছে। এ খাতে এখন পর্যন্ত এসেছে ২৮ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ। জানুয়ারি ২০২৫ শেষে দেশে রয়েছে ১৮ কোটি ৮৪ লাখ মোবাইল গ্রাহক, ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং ১১ কোটি ৫৫ লাখ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী।
সরকার ২০২৭ সালের মধ্যে খুচরা লেনদেনের ৭৫ শতাংশ ডিজিটাল করার লক্ষ্য নিয়েছে। আর ২০৩১ সালের মধ্যে পুরোপুরি নগদবিহীন অর্থনীতি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, কেবল ডিজিটাল পেমেন্ট প্রসারিত হলে বাংলাদেশের জিডিপি বছরে ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার ৫৮ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডিজিটাল ফাইন্যান্সের প্রতিটি লেনদেনের রেকর্ড থাকায় সরকারি ভর্তুকি, পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতি ও কর ফাঁকি কমবে। তবে নগদনির্ভরতা কমাতে হলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি এবং এমএফএস ক্যাশ আউট খরচ যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন