শনিবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:২১ ২৩ এপ্রিল ২০২৫
চুয়াডাঙ্গায় বয়ে চলা মাঝারি তাপপ্রবাহে জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ।
এর একদিন আগে, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল), জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে ৩.২ ডিগ্রি এবং আর্দ্রতা কমেছে ৩৩ শতাংশ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এটি জেলার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে, ২৮ মার্চ রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তবে ২৭ এপ্রিল থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
চলতি মৌসুমে ১৪ মার্চ থেকে জেলায় শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। এরপর একের পর এক দিনে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে জেলার ওপর দিয়ে। আবহাওয়া অফিস জানায়, ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি পর্যন্ত মৃদু এবং ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই হিসাবে মার্চ-এপ্রিল মাসে অন্তত ১১ দিন তাপপ্রবাহ ছিল, যার মধ্যে আট দিন মৃদু এবং তিন দিন মাঝারি।
তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দিনে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। শহরের দোকানপাটে খদ্দের কম, ব্যবসায় ধস নেমেছে। হাটকালুগঞ্জ বাজারের কাপড় বিক্রেতা খায়রুল ইসলাম বলেন, “দিনে গ্রামের মানুষ বেশি আসে। এখন গরমের কারণে কেউ আসে না। বসেই কাটছে সময়।”
এদিকে মাঠের কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে। ফসল ঘরে তোলার মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদা বেশি থাকায় শ্রমিকরা নিচ্ছেন দ্বিগুণ মজুরি। সদর উপজেলার বোয়ালমারী মাঠের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, “রোদে থাকা যাচ্ছে না। তবুও মাঠে আসতে হচ্ছে। ৪০০ টাকার শ্রমিক এখন ৭০০-৮০০ টাকাও চাইছে, তাও মিলছে না।”
তীব্র রোদে কাজ করতে গিয়ে কচুখেতে সেচের সময় ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হচ্ছে আবুল কাশেমকে। তিনি জানান, রোদে চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে কিছুটা আরাম পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
চলমান এই তাপপ্রবাহ থেকে কবে মুক্তি মিলবে, তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ২৭ এপ্রিলের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে, তবে এর আগে তাপপ্রবাহের দাপট আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন