ভুলে যাওয়া এক জ্বালাময়ী প্রতিবাদ:সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে প্রেসসচিবের আবেগঘন পোস্ট!

ভুলে যাওয়া এক জ্বালাময়ী প্রতিবাদ:সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে প্রেসসচিবের আবেগঘন পোস্ট!

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৭:৩৬ ২৫ মে ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। শনিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি তুলে ধরেন বিএনপির দুঃসময়ে সালাহউদ্দিনের সাহসী ভূমিকা এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের নির্মম বাস্তবতা।

প্রেসসচিব লেখেন, “২০১৫ সালে সালাহউদ্দিন আহমেদ যখন গোপনে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল চরম উত্তপ্ত। খালেদা জিয়াকে গুলশানের কার্যালয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হয়, শীর্ষ নেতারা ছিলেন আত্মগোপনে বা কারাগারে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রতিদিন গোপন সূত্রে সালাহউদ্দিনের পাঠানো বিবৃতি আমাদের কাছে পৌঁছাতো— তীক্ষ্ণ, সরাসরি, এবং সাহসিকতায় ভরপুর। সেই বিবৃতিগুলো যেন শেখ হাসিনার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাত।”

শফিকুল আলম জানান, তিনি এবং ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির দক্ষিণ এশিয়া প্রধান ক্রিস অটন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের সহায়তায় খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে প্রবেশ করে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেই সময় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতটাই স্পর্শকাতর ছিল যে তারা ব্রিটিশ হাইকমিশনের পরিচয়ে সেখানে প্রবেশ করতে বাধ্য হন।

তিনি আরও লেখেন, “রুহুল কবির রিজভীর লেখা বিবৃতি আবেগপ্রবণ হলেও ছিল জটিল; তুলনায় সালাহউদ্দিনের বিবৃতি ছিল নির্মম বাস্তবতায় পরিপূর্ণ এবং এক কথায় বিস্ফোরক। তার বিবৃতিগুলো ছিল বিএনপির ইতিহাসে অন্যতম জ্বালাময়ী প্রতিবাদ। শেখ হাসিনার প্রশাসন এতটাই ক্ষিপ্ত হয়েছিল যে, সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের নির্দেশ দেওয়া হয়।”

২০১৫ সালের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে ‘অপহরণ’ করা হয় এবং পরে তাকে ভারতে শিলং এলাকায় দেখা যায়। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদের সাহসিকতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রেসসচিব, যিনি সেই সময় একা অবস্থান নিয়েছিলেন স্বামীর মুক্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এবং গণমাধ্যমে।

তিনি লেখেন, “হাসিনা আহমেদের প্রতিবাদ, আন্তর্জাতিক সচেতনতা এবং মিডিয়ার চাপই হয়তো সালাহউদ্দিনকে গুমের হাত থেকে বাঁচিয়ে শিলং পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।”

পোস্টের শেষাংশে শফিকুল আলম আফসোস করে বলেন, “আজকের তরুণ বিএনপি কর্মীরা সেই সংগ্রামের দিনগুলো ভুলে গেছেন। তারা হয়তো জানেই না, কী ভয়ংকর দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে গিয়ে সেই সময় বিএনপি টিকে ছিল। বর্তমানের রাজনৈতিক স্বস্তির সময়গুলো যেন সেই জ্বলন্ত ইতিহাসকে ঢেকে ফেলেছে।”

এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই শফিকুল আলমের এই স্মৃতিচারণকে বিএনপির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে দেখছেন— এমন এক অধ্যায়, যা হয়তো সময়ের স্রোতে ভুলে যেতে বসেছে একটি প্রজন্ম।
 

বিজ্ঞাপন