সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৫৮ ১৯ মে ২০২৫
জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। রোববার (১৯ মে) ব্রিটিশ সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী ডেভিড বার্গম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করা নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
বার্গম্যান মন্তব্য করেন, “বাংলাদেশে এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে শুধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থক হওয়া কিংবা দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখাই কাউকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য যথেষ্ট।” তিনি বলেন, “এই বাস্তবতায় দেশের অনেকেই নিজেদের আর নিরাপদ মনে করছেন না। কারণ, যেকোনো মুহূর্তে ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা এখন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের তথাকথিত নতুন ‘সিভিল সোসাইটি’ এখন আর সুবিচার কিংবা ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে মাথা ঘামায় না। বরং তারা প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। দেশে মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার জন্য আর কোনো বড় রাজনৈতিক শক্তি দৃশ্যমান নয়।”
ডেভিড বার্গম্যান তার পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটি কোনোভাবেই ন্যায়বিচার নয়। এটি হচ্ছে দায়মুক্তির ছায়ায় প্রতিশোধ গ্রহণের একটি প্রক্রিয়া। এটি এমন এক ভয়াবহ সংকেত, যা আইনের শাসনে বিশ্বাসী যেকোনো মানুষের জন্যই আতঙ্কজনক— তারা যেই মতাদর্শেই বিশ্বাস করুক না কেন।”
এদিকে রোববার (১৮ মে) সকালে নুসরাত ফারিয়াকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। পরে তাকে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এক হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ জন শিল্পীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলার বাদী এনামুল হক ওই মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮৪ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং আরও ৩০০-৪০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নুসরাত ফারিয়া ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে অভিযানে অর্থায়নকারী অন্যতম একজন। তার সঙ্গে এই মামলায় আরও নাম রয়েছে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, জায়েদ খান, সুবর্ণা মুস্তাফা, রোকেয়া প্রাচী, সোহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন, জ্যোতিকা জ্যোতি, সাইমন সাদিক ও আজিজুল হাকিমের।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ডেভিড বার্গম্যানের বক্তব্য এই উদ্বেগকে আরও তীব্র করেছে।
বিজ্ঞাপন