ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রাণ নাশের হুমকি

ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রাণ নাশের হুমকি

উপজেলা প্রতিনিধি, আমতলী(বরগুনা):
উপজেলা প্রতিনিধি, আমতলী(বরগুনা):

প্রকাশিত: ১০:৩৩ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাস মালিক গ্রুপের সদস্য পদ পেতে তিন বাস মালিক বরগুনা বাস মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিচলু, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সগির হোসেন, সামসুল হক গাজী ও রাজ্জাক চৌকিদারসহ ছয়জনকে ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দেয় । ওই টাকা নিয়েও মালিক গ্রুপ তাদের সদস্য পদ দেয়নি। উল্টো টাকা ফেরত চাওয়ায় তারা তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বাস গাড়ীর মালিক দীপংকর কুমার, আশরাফ আলী সিকদার ও মীর শহিদুল ইসলাম দুলাল। তারা আরো অভিযোগ করেন বরগুনা বাস ও মিনি বাস মালিক গ্রুপ সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকসহ ছয়জনের প্রাণনাশের হুমকিতে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছের। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসনের কাছে বাস মালিক গ্রুপের ছয় সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। এছাড়া দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোটার ও আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার ও নিজাম উদ্দিন সরদার যৌথভাবে বাস ব্যবসা করতো। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পরপরই নিজাম উদ্দিন সরদার বরগুনা বাস ও মিনি বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছগির হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে নিজাম উদ্দিন সরদার বাস দখল করে নেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক হয় কিন্তু নিজাম সরদার সেই বৈঠকের সিধান্ত মানেননি। উল্টো বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছগির হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিক জসিম উদ্দিন সিকদারকে বাসের মালিকানা না দিয়েই নিজেই মালিক সেজে বাস দখল করে নেন। গত ১৫ বছর ধরে তিনি (নিজাম) ওই বাস দখল করে একাই ব্যবসা করে আসছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মীর শহীদুল ইসলাম দুলাল বলেন, আমি, দীপংকর কুমার নন্দি ও আশরাফ আলী সিকদারের তিন খানা বাস গাড়ী আছে। ওই গাড়ীগুলো বরগুনা মালিক গ্রুপ অর্ন্তভুক্ত করতে এবং সদস্য পদ পেতে ২০১৬ সালে আমরা আবেদন করি। বরগুনা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিচলু, সাধারণ সম্পাদক সগির মিয়া, সদস্য হাসান মৃধা, আব্দুর রাজ্জাক ও স্বজল মৃধা আমাদের কাছে সমিতির সদস্য পদ পেতে গাড়ী প্রতি ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। তাদের দাবীকৃত ৩০ লক্ষ টাকা আমরা তিনজনে দিয়ে দেই। তারা সমিতির সদস্য পদ না দিয়ে দীপংকর কুমার (গাড়ী নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪৮৪৬) লিখিত অস্থায়ী এবং আশরাফ আলী সিকদার (গাড়ী নম্বর ঢাকা মেট্রো-জ-০৪-০২৫৬) ও মীর শহিদুল ইসলাম (গাড়ী নম্বর পটুয়াখালী-জ-১১-০০২১) মৌখিক ভাবে আমতলী-তালতলী সড়কে চলাচলের অনুমতি দেয়। কিছুদিন গাড়ী চলাচল করলেও মালিক গ্রুপ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জনে পুনরায় গাড়ী প্রতি দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। এ টাকা দিতে আমরা অস্বীকার করলে তারা আমাদের গাড়ীগুলো সড়কে চলাচলের প্লাই বন্ধ করে দেয়। গাড়ী চলাচল বন্ধ থাকায় গাড়ীগুলোর যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে গেছে এবং আমাদের মালিক গ্রুপের সদস্য পদও দেয়নি। আমাদের দেয়া টাকা মালিক গ্রুপ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য সদস্যগণের কাছে ফেরত চাইলে তারা আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের অব্যহত প্রাণ নাশের হুমকিতে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রাণ রক্ষা ও টাকা ফেরত পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ পুলিশ প্রশাসনকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন দীপংকর কুমার ও আশরাফ আলী সিকদার। 
  
বরগুনা বাস ও মিনি বাস মালিক গ্রুপ সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছগির হোসেন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তাদের আমি চিনি না। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিক জসিম উদ্দিন সিকদার তার বিষয়টি নিয়ে বরগুনা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল কিন্তু বিষয়টির সমাধান হয়নি।  
বরগুনা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম মোস্তফা কিসলু টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, বাস মালিক গ্রুপের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাদের নেয়া হয়নি। 
বরগুনা পুলিশ সুপার মোঃ ইব্রাহিম খলিল বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবগত হলাম। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজ্ঞাপন