মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি

মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগে গণশুনানি

জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল:
জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল:

প্রকাশিত: ০৯:১২ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ, মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকাসহ নানান অনিয়মের অভিযোগে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার চর চতিলা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। চর চতিলা আলিম মাদরাসার হলরুমে শনিবার সকাল ১০টায় গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গনশুনানিতে অংশ নেন অত্র মাদরাসার গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনসহ চতিলা, বিলডগা, বনমালী, জোতবাগল, চক্কাশী গ্রামের শতাধিক মানুষ।

সরেজমিনে, ৭জুলাই থেকে শনিবার ৭সেপ্টেম্বর গনশুনানির আগ পর্যন্ত মাদরাসার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।

গনশুনানিতে অংশ নেয়া মাদরাসায় উপাদক্ষ পদে চাকরি প্রত্যাশী, চাতুটিয়া গ্রামের মুরতুজা, আজগড়া গ্রামের মো. এনামুল হক এবং গ্রন্থাগার পদে চাঁনপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম দাবি করেন ৩জনের থেকে, মাদরাসা উন্নয়ন ফান্ডের মোট ১৭লাখ ৮০হাজার টাকা নিয়েছেন অধ্যক্ষ। চাকরি বা টাকা ফেরত কোনটাই দেননি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা।

এছাড়াও গনশুনানিতে, মাদরাসায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপাদক্ষ মো. আ. হাই ৯লাখ টাকা, আয়া পদে খাদিজা খাতুন ৬লাখ ৮৫হাজার টাকা, নিরাপত্তা প্রহরী পদে মো. রিফাত ৮লাখ টাকা, নৈশ প্রহরী পদে মো. ঠান্ডু ৬লাখ টাকা অধ্যক্ষ এবং গভর্নিং বডির একাধিক সদস্যকে দেয়ার দাবি করেন।

এছাড়াও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টিউশন ফি, মাদরাসার মাঠে গাছ বিক্রির টাকাসহ, বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠে গনশুনানিতে।

অত্র মাদরাসার সাবেক বিদ্যাউৎসাহী সদস্য মো. সাফিকুল অভিযোগ করেন, আমার বাড়ির পাশেই মাদরাসাটি অবস্থিত,  দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষ মাদরাসায় নিয়মিত আসেন না। মাদরাসা মাঠে মেহগনি গাছ ছিল, উনি বিক্রি করে টাকা কি করছে জানি না। নিয়োগে দুর্নীতি আভাস পেয়ে পরবর্তীতে কোন কাগজে আমি স্বাক্ষর করিনি।

মাদরাসার সাবেক সভাপতি ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম, প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার বেশি অর্থ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে অর্থ আত্মসাৎ ও বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। বিশেষ করে নিয়োগ বাণিজ্যে, একজন নিয়োগের বিপরীতে একাধিক মানুষের থেকে টাকা নিয়ে প্রিন্সিপাল তার সহযোগীদের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে গনশুনানিতে অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম, গাছ বিক্রি ও এতো টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কিছু টাকা নিয়ে মাদরাসার উন্নয়নের কাজে লাগানো হয়। কমিটির সাবেক সদস্যদের নোটিশ করা হবে, তারা আসলে হিসাব নিকাশ করে সব পরিষ্কার করবো।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হায়দার বলেন,  মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজ্ঞাপন