শুক্রবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২৫ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রকাশিত: ০৫:৫০ ১৪ নভেম্বর ২০২৫
যশোর–৬ (কেশবপুর) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা প্রকাশের পর তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। দলীয় সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর এতে ক্ষুব্ধ কেশবপুরের ত্যাগী ও অভিজ্ঞ নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ।
দলের তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ—
“২৫ বছর ধরে দলের সংকটে যিনি কেশবপুরে বিএনপিকে ধরে রেখেছেন, তাকে বাদ দিয়ে এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যার কেশবপুরের মানুষের জন্য কোনো দৃশ্যমান কাজ নেই।”
আজাদের দীর্ঘ ত্যাগ, অথচ মনোনয়ন অন্যজনের
১৯৯৭ সালে বিএনপির সবচেয়ে কঠিন সময়ে কেশবপুরে সংগঠনকে ধরে রেখেছিলেন আলহাজ্জ আবুল হোসেন আজাদ। পরে দলীয় হাই কমান্ড তাকে থানা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দেয়।
নেতাকর্মীরা বলছেন—
আজাদ কোনো কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কখনো অর্থ নেননি।
বরং দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিজের পকেট থেকে হাজার হাজার টাকা খরচ করেছেন।
দলের দূর্দিনে তিনি ধানের শীষ নিয়ে তিনবার নির্বাচন করেছেন।
২০০৮, ২০১৮ এবং ২০২০ সালের উপনির্বাচনে সরকার–সমর্থিত প্রশাসনের বাধার মুখে পরাজিত হন।
তার স্ত্রী রেহেনা আজাদ—কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি—তদুপরি নিজেও মাঠে থেকে সংগঠনে নারীদের নেতৃত্ব বৃদ্ধি করতে সফল হয়েছেন।
মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ
দলের অভ্যন্তরে অনেকেই বলছেন—
“যে নেতার ত্যাগে কেশবপুরে বিএনপি টিকে আছে, নির্বাচন এলে তাকেই ভুলে যাওয়া হয়।”
তারা দাবি করছেন, একটি কুচক্রী মহল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিভ্রান্ত করে আজাদকে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করেছে। এমনকি অভিযোগ উঠেছে,
“তারা চায় না বিএনপি যশোর–৬ আসনে জিতুক।”
শ্রাবণকে প্রার্থী করায় উঠছে প্রশ্ন
কেশবপুরের তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য—
“শ্রাবণ আওয়ামী পরিবারের সন্তান। কেশবপুরে বিএনপি, যুবদল বা ছাত্রদলের জন্য তার অবদান নেই। এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাকে দিয়ে নির্বাচন করলে ত্যাগী নেতাদের মনোবল ভেঙে যাবে।”
এমনকি জানা গেছে, শ্রাবণকে প্রার্থী ঘোষণার পর এলাকায় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু দাগী আসামি এবং অতীতে বিএনপি–জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলায় জড়িত ব্যক্তিরাও এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে আজাদের সাফল্য
ইতোমধ্যে যশোর–৬ আসন নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে মানববন্ধন, স্মারকলিপি দিয়ে হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু আইনগত লড়াইয়ে সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দেন আবুল হোসেন আজাদ।
এ কারণে তৃণমূল বলছে—
“যে নেতা দলের অস্তিত্ব রক্ষা করেছেন, তাকেই বঞ্চিত করা হলো।”
শেষ কথা
যশোর–৬ (কেশবপুর) বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের মতে, আজাদকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দিলে
দলে হতাশা বাড়বে, মাঠ–পর্যায়ের সংগঠনে দুর্বলতা তৈরি হবে এবং কেশবপুরে BNP–র জয়ের সম্ভাবনা কমে যাবে।
