বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সুযোগসন্ধানী, দলছুট, নেশাখোর ব্যক্তিদের নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, এমন দাবি তুলে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জেলা কৃষক দলের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি জানিছেন তারা।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের দাদামোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে শহরের শাপলা চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক খলিলুর রহমান খলিলের নেতৃত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহিবুল হুদা রবিন,মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, কৃষকদলের চিলমারী উপজেলার আহ্বায়ক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন, ফুলবাড়ী উপজেলার সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সেরা সহ জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা। বক্তারা ঘোষিত কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানান। একই সঙ্গে বিগত সময়ে আন্দোলন ও মাঠে সক্রিয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।
জেলা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক খলিলুর রহমান খলিলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, সম্প্রতি ঘোষিত কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটিতে ‘মাদকাসক্ত ও দলছুট’ ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে। যারা এত দিন আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছের লোক সেজে সুবিধা নিয়েছে তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। জেলা কৃষক দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করছে।’ অবিলম্বে ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান বক্তারা।
সাবেক আহ্বায়ক খলিলুর রহমান খলিল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রাম জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে মাদকাসক্ত ও দলছুট লোকদের স্থান দেওয়া হয়েছে। মূলত টাকার বিনিময়ে এই পকেট কমিটি করা হয়েছে। এজন্য বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ভাই দায়ী। তিনি টাকার বিনিময়ে কেন্দ্র থেকে এই কমিটি অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। কমিটি অনুমোদনের পত্র গ্রহণকালে তার উপস্থিতির ছবি তারই প্রমাণ। তিনি (আব্দুল খালেক) আমাদের অভিভাবক। কিন্তু তিনি পক্ষপাতমূলক কমিটি করেছেন।’
সদ্যঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিতে মাদকাসক্তদের স্থান দেওয়ার দাবির সত্যতা প্রশ্নে কৃষক দলের এই নেতা বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। তাদের ডোপ টেস্ট করলেই আমাদের অভিযোগের সত্যতা মিলবে।’
তবে নিজের বিরুদ্ধে কমিটি অনুমোদনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, ‘কৃষক দলের কমিটি দেওয়ার দায়িত্ব ওই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির। আগেও আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছিল। তারা থানা কমিটি করতে পারে নাই, কাজকর্ম করতে পারে নাই। কেন্দ্র আমাদের কমিটি ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছে। আমরা বলেছি, তোমরা দেখেশুনে দাও। যারা কাজ করে তাদের নিয়ে তোমাদের কমিটি তোমরা অনুমোদন দাও। কেন্দ্র খোঁজখবর নিয়ে কমিটি দিয়েছে। এখানে আমার বা বিএনপির কোনও হস্তক্ষেপ নেই।’
কমিটিতে মাদকাসক্ত ও দলছুট ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া প্রশ্নে বিএনপির এই বিভাগীয় নেতা বলেন, ‘যারা অঙ্গ দল নিয়ে কাজ করে, যারা জেলায় কাজ করে, তারা এটা ভালো বলতে পারবেন। এ ব্যাপারে আমার মন্তব্য নেই।’
প্রসঙ্গত, জেলা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন রহমানকে আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা রুকুনুজ্জামান খন্দকার রুকুকে সদস্যসচিব করে কুড়িগ্রাম জেলা কৃষক দলের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি হাসান জাকির তুহিন এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন গত ১২ সেপ্টেম্বর এই কমিটি অনুমোদন করেন বলে জেলা কৃষক দল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন