মঙ্গলবার , ০৩ জুন, ২০২৫ | ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪৩ ১ জুন ২০২৫
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর প্রধান কার্যালয়ে আবারও অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার, ১ জুন, অর্থ আত্মসাৎ এবং নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক রবিউল হকের নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান পরিচালনা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দুদকের জনসংযোগ দপ্তর।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় নগদে অভিযান চালিয়েছিল দুদক। সেই সময় সহকারী পরিচালক রুহুল হক ও তানজির আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম নগদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে এবং প্রায় ২,৩০০ কোটি টাকার দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়। ওই অভিযানে জানা যায়, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) খাতে প্রায় ৫,০০০ অবৈধ এজেন্ট সক্রিয় রয়েছে, যারা হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে অর্থ পাচারে জড়িত। শুধু গত এক বছরেই এসব এজেন্টের মাধ্যমে প্রায় ৭৫,০০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
বর্তমান অভিযানে নগদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ কমিশন লেনদেন এবং মানি লন্ডারিং আইনের লঙ্ঘন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক নথিপত্র, এজেন্ট নিবন্ধন সংক্রান্ত রেকর্ড, নিয়োগ সংক্রান্ত দলিল ও ডিজিটাল ডেটা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দুদক সূত্র বলছে, প্রমাণ মিললে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত ও মামলা দায়ের করা হবে।
‘নগদ’ ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে। এটি সরকারি মালিকানাধীন হলেও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বেসরকারি অংশীদার ‘নগদ লিমিটেড’। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখলেও গত কিছু বছরে নগদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।
দুদক বলছে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হলে এ ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানিক দুর্বলতা এবং অপরাধীদের প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে অর্থপাচার ও হুন্ডির মতো অপরাধ বেড়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি। এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউসহ একাধিক সংস্থা বর্তমানে তদন্ত কাজে সহযোগিতা করছে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি খাতকে নিরাপদ রাখতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আরও কঠোর তদারকি এবং নীতিমালার সংস্কার প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন