ইসরায়েল পারমাণবিক হামলা করলে জবাব দিবে পাকিস্তানও: ইরান

ইসরায়েল পারমাণবিক হামলা করলে জবাব দিবে পাকিস্তানও: ইরান

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৬:৪৭ ১৬ জুন ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান হামলা-পাল্টা হামলায় পরিস্থিতি দিন দিন উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের তেহরানসহ বেশ কিছু সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে ইরানও তীব্র পাল্টা হামলা শুরু করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এই প্রেক্ষাপটে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মহসেন রেজায়ি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তিনি বলেন, যদি ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তবে পাকিস্তানও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পারমাণবিক জবাব দেবে। তিনি আরও জানান, পাকিস্তান ইতিমধ্যে ইরানকে এই আশ্বাস দিয়েছে।

জেনারেল রেজায়ি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (IRGC) একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “পাকিস্তান আমাদের আশ্বস্ত করেছে, যদি ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করে, তাহলে তারাও জবাবে পারমাণবিক হামলা চালাবে।”

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। ইরান এখনও তার অনেক গোপন সামরিক শক্তি প্রকাশ করেনি বলেও তিনি সতর্ক করেন। এদিকে, দুই দেশের চলমান সংঘাতে ইতোমধ্যে প্রায় ২৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

তবে পাকিস্তান সরকার এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে অতীতের মতোই দেশটি ইরানের অবস্থানকে কূটনৈতিকভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ সংস্থা (ICAN) অনুযায়ী, বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যার মধ্যে ইসরায়েল ও পাকিস্তান দুটোই রয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের এই আশ্বাসকে সরাসরি সামরিক প্রতিশ্রুতি না বলে কূটনৈতিক সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ এই সংঘাত কেবল মধ্যপ্রাচ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে জড়িত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার বহু দেশের কৌশলগত স্বার্থ।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, তিনি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে একটি চুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি ইরানকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, “যদি তারা যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করে, তাহলে মার্কিন সেনাবাহিনী এমন শক্তি নিয়ে আঘাত হানবে, যা ইতিহাসে আগে কখনও দেখা যায়নি।”

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক অনলাইন পোস্টে বলেন, “ইসরায়েলের পারমাণবিক ক্ষমতা নিয়ে পশ্চিমাদের চিন্তা করা উচিত। কারণ এই সংঘাত শুধু একটি অঞ্চল নয়, পুরো বিশ্বকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে। ইসরায়েল একটি বেপরোয়া রাষ্ট্র, যাকে সমর্থন দিয়ে পশ্চিমারা ভয়াবহ ভুল করছে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান-পাকিস্তান এই বার্তাটি কৌশলগত হলেও, এর প্রভাব আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক হতে পারে। পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই এখন বিশ্ব শক্তিগুলো সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে।
 

বিজ্ঞাপন