সোমবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৪৪ ২৮ এপ্রিল ২০২৫
মার্কিন এনজিওএসও স্যাটেলাইট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক অবশেষে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স পেল। সোমবার (২৮ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গত ২৫ মার্চ Non-Geostationary Orbit (NGSO) Satellite Services Operator In Bangladesh শীর্ষক একটি লাইসেন্সিং গাইডলাইন জারি করে। এই গাইডলাইনের আওতায় স্টারলিংক নির্ধারিত ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসিতে আবেদন করে। এরপর ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিটিআরসির ২৯৪তম কমিশন সভায় স্টারলিংকের লাইসেন্স ইস্যুর নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেট জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করল। শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করল বিশ্বখ্যাত এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান।
এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, "জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বারবার ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশে আনার দাবি জোরালো হয়েছিল। জনগণের সেই দাবির প্রতিফলন হিসেবেই প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি বাংলাদেশকে একটি বিনিয়োগবান্ধব দেশের বার্তা দিতেও এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, দেশের হাওর, বাওড়, দ্বীপাঞ্চল, দুর্গম পার্বত্য এলাকা এবং উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে দ্রুততম সময়ে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে স্টারলিংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফাইবার অবকাঠামো যেখানে নেই বা দুর্বল, সেখানে স্টারলিংক নিরবিচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করবে।
ফয়েজ তৈয়্যব জানান, স্টারলিংকের অন্যতম বড় সুবিধা হলো — লোডশেডিংয়ের সময়েও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হবে না। বর্তমানে ফাইবার নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশের অনেক এলাকায় উচ্চগতির নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা সম্ভব হয় না। স্টারলিংক এসব সমস্যার সমাধান এনে দেবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেলিকম টাওয়ারের ৬৫ শতাংশ এখনো ফাইবার সংযোগবিহীন এবং সেখানে দুর্বল মাইক্রোওয়েভ লিঙ্ক ব্যবহার করা হয়। স্টারলিংকের মাধ্যমে টাওয়ারগুলোতে উন্নত সংযোগ পৌঁছানো সম্ভব হবে।
ফয়েজ তৈয়্যব আরও বলেন, স্টারলিংকের প্রবেশের ফলে বাংলাদেশের মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। এটি প্রচলিত ভয়েস কল ও ডেটা বান্ডেলভিত্তিক সেবার বাইরে ডিজিটাল সার্ভিস কেন্দ্রিক নতুন ইকোসিস্টেম গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, “স্টারলিংক বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতের ডিরেগুলেশনের সূচনা করবে। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে উচ্চমানের ইন্টারনেট সেবার ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক সুযোগ তৈরি হবে।”
বিজ্ঞাপন