শুক্রবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২৫ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রকাশিত: ১০:২০ ১৪ নভেম্বর ২০২৫
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরের ৫১ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণী ও শিশু সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মনোবল সাহস আর হাতে রেখে হাত, নতুন স্বদেশে আনি আলোর প্রভাত স্লোগানকে সামনে রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ফুলকুঁড়ি আসর তারারমেলা শাখা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গগন হরকরা গ্যালারিতে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির শাখা পরিচালক খন্দকার আহনাফউজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন ফুলকুঁড়ি আসরের কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক অগ্রপথিক মাহফুজুর রহমান। এসময় বিশেষ অতিথি বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিম, আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম জাকির হোসেন ও অধ্যাপক ড. এরশাদ উল্লাহ, আইআইইআর এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খ.আরিফা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংগঠনটির সহকারী পরিচালক মুবাশ্বির আলমসহ ১৮টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, সংগঠনটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার ১৮টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন, মাইন্ড ম্যারাথন, ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, সেরাদের সেরা ও বর্ষসেরা কুঁড়িদের পুরস্কৃত করা হয়। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিজয়ী পুরস্কার, ৭ জন সেরাদের সেরা ও একজন বর্ষসেরা কুঁড়ির পুরস্কার লাভ করেন। অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে অভিভাবকবৃন্দ অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, শিশুদের নিয়ে এ ধরনের আছে বলেই বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব করতে পারি। ফুলকুঁড়ি ভালো, নৈতিক গুণ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে শিশুদের গড়ে তুলতে যে ভূমিকা রাখছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সকলকে অনিঃশেষ প্রীতি, ভালোবাসা ও সুবাসিত ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সংগঠনটির পরিচালক খন্দকার আহনাফউজ্জামান বলেন, শিশুদের জন্য একটি স্বপ্নীল, প্রাণময় ও শিশুবান্ধব পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে ১৯৭৪ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছিলো জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসর। নিরলস পথচলার ৫০ টি ফাল্গুন অতিক্রম করে শিশুদের প্রিয় এই সংগঠনটি আজ পৌঁছে গেছে ৫১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে আসরের কুঁড়ি ও সংগঠকগন ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীব্যাপী। পৃথিবীকে গড়ার দীপ্ত শপথে বলীয়ান এ ফুলগুলোর সুবাসে সুবাসিত হচ্ছে ধরণী। মেলে ধরেছে তারা শান্তি, সৌন্দর্য আর সম্প্রীতির সামিয়ানা।
প্রধান আলোচক মাহফুজুর রহমান বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
ফুলকুঁড়ি আসর শিশুদের একাডেমিক মান নৈতিক, সাংস্কৃতিক মান বিকাশে সারাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছোট ছোট অর্জন মানুষকে বড় করে তোলে।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। সে অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করো। পড়াশোনা নিয়মিত হতে হবে। বাবা-মা, শিক্ষকদের আদেশ উপদেশ মানতে হবে। সময়নিষ্ঠ হতে হবে। স্মার্ট ডিভাইসকে স্মার্টলি ব্যবহার করা শিখতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিশুর মনন বিকাশে অভিভাবকের আচরণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কিভাবে শিশুকে ডিল করছেন তা শিশু বিকাশে প্রভাব ফেলে। শিশুদেরকে পরিমিত সময় দিতে হবে। কোথায়, কিভাবে ব্যয় করছে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের লাইনচ্যুত হওয়ার অনেক পথ খোলা। তাই ছেলে-মেয়েকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সে কার সাথে চলাফেরা করে তা নজরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ফুলকুঁড়ি আসর একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান দাবি করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একটা শিশু কিভাবে মেধাবী শিক্ষার্থী, পরিবারের ভালো সন্তান, সমাজে শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে শিশুবান্ধব কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। পাশাপাশি নৈতিকভাবে একটা শিশু নিজেকে গড়ে তোলা, ইহকাল এবং পরকালের ভারসাম্য রেখে জীবনকে সাজানো, সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, দেশপ্রেম, পরিবারের প্রতি যে ভালোবাসার সম্পর্ক, সমাজের প্রতি যে দায়বদ্ধতা, রাষ্ট্রের প্রতি যে কর্তব্য এগুলো অর্জনে এই সংগঠনটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়। তাদেরকে সেইভাবে উদ্বুদ্ধ করে সেই ভাবে গঠন করে। ফুলকুঁড়ি ব্যতিক্রমধর্মী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিশু কিশোরদের নিয়ে কাজ করছে। আশা করছি সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর দেশ গঠনে ফুলকুঁড়ি অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।
