সোমবার , ২৩ জুন, ২০২৫ | ৯ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:৫৫ ২২ জুন ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার পর। এই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি এই হামলাকে "সাহসী সিদ্ধান্ত" এবং "ইতিহাস গঠনের পদক্ষেপ" বলে উল্লেখ করেছেন।
রবিবার (২২ জুন, ২০২৫) ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি পূর্ব-রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু করেছে যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ করতে পারেনি। ইতিহাস রেকর্ড করবে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসনব্যবস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্র হাতে পাওয়া থেকে বিরত রাখতে কাজ করেছেন।”
নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েল আশঙ্কা করে আসছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এবং এটি ইসরায়েলের জন্য অস্তিত্বগত হুমকি। তবে ইরান বরাবরই দাবি করে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং শুধুমাত্র বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ওপর এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘাতের ইঙ্গিত দিতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সীমিত করার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এছাড়া ইরানঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান তৎপরতা যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের উদ্বিগ্ন করে তোলে।
ইরান এখনো এই হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলো এটিকে “বিদেশি আগ্রাসন” হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দেশজুড়ে সামরিক সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, এই হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এই হামলার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, একইসঙ্গে এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেও বিবেচিত হবে। নেতানিয়াহুর মুখে ট্রাম্পের প্রশংসা ভবিষ্যতের মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কৌশলগত সুবিধা তৈরি করতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
বিজ্ঞাপন