সোমবার , ২৩ জুন, ২০২৫ | ৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৩:৩৪ ২২ জুন ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলার নির্দেশ দেন। এই ঘটনার পরই ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভয়ংকর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে— এখন থেকে প্রতিটি মার্কিন নাগরিক ও সামরিক সদস্যকে ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
হামলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “এই অভিযানের মাধ্যমে আমরা ইসরায়েলের ওপর থাকা হুমকি মুছে দিয়েছি।” তবে তিনি এই হামলার কোনো তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয়তা বা যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি নিরাপত্তা হুমকির তথ্য দেননি, যা মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী এমন পদক্ষেপকে বৈধতা দিতে প্রয়োজন।
ট্রাম্প ইরানকে “মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসী মাস্তান” বলে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, “তারা বহু বছর ধরে ‘আমেরিকার মৃত্যু হোক’ স্লোগান দিয়ে আসছে।” যদিও তিনি এ কথার ভিত্তিতে কোনো সামরিক হুমকি বা তাৎক্ষণিক বিপদের প্রমাণ দেননি। প্রেসিডেন্ট আরও দাবি করেন, ইরানের ঘৃণামূলক কর্মকাণ্ডের ফলে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন, তবে তারা মার্কিন নাগরিক কি না, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারে জানানো হয়, “প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক, সেনা সদস্য এবং যেকোনো মার্কিন স্বার্থ এখন আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তু।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘোষণাটি নিছক হুমকি নয়, বরং এর পেছনে বাস্তব প্রতিশোধপরায়ণ কৌশল রয়েছে, যা সাইবার হামলা, গুপ্ত হামলা বা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর সরাসরি হামলার রূপ নিতে পারে।
ট্রাম্প যখন বলেন “আমরা ইসরায়েলের ওপর হুমকি মুছে দিয়েছি”, তখন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। অনেকেই মনে করেন, এই হামলা আমেরিকার স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়, বরং ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরিচালিত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এমন অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যয়বহুল সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে, যার মূল্য দিতে হবে মার্কিন সেনাদের জীবন ও করদাতাদের অর্থ দিয়ে।
এই প্রেক্ষাপটে ইরান থেকে আসা সর্বশেষ ঘোষণাটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ও সংঘাতের শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন দুই পক্ষকেই সংযম প্রদর্শন ও আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে।
বিজ্ঞাপন