শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিতে নিষেদ করেছে ভারত সরকার

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিতে নিষেদ করেছে ভারত সরকার

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০২:৫৫ ৯ অক্টোবর ২০২৫

শেখ হাসিনাকে আগের মতো রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখছে ভারত সরকার—এমন দাবি করেছেন দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ রাধা দত্ত। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ভারত যে পুনর্বিবেচনা করছেন, তা আগে যে অবস্থান ছিল তার থেকেই খানিকটা সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। রাধা দত্তের এই মন্তব্য প্রতীত হচ্ছে যে, আশ্রয় গ্রহণের পর থেকেই ক্ষমতাধীনের বিরুদ্ধে নিজের মতামত ও মন্তব্য প্রকাশ করায় শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে ভারত সরকার উদ্বিগ্ন এবং তাকে সরাসরি রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছে।

রিপোর্ট বলছে, ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে অবরুদ্ধ অবস্থান ও অভ্যুত্থান বিষয়ক নিজের বক্তব্য প্রকাশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ খোলামেলাভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন; তবে এসব কর্মকাণ্ডকে কিছু বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। এ প্রসঙ্গে Dr. ইউনূস ও কয়েকজন স্থানীয় রাজনীতিবিদও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বহুবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও—যে ওই আসামিকে (জুলাইতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি) বক্তব্য দিতে বাধা দেওয়া হোক—সুস্পষ্ট ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি, বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই শেখ হাসিনার উপস্থিতি কমে এসেছে; আর এই বিষয়টিকে রাধা দত্ত ভারতের পক্ষ থেকে একটি বার্তা হিসেবে দেখছেন—অর্থাৎ ভারত সরকার ইংগিত দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানে ঢাকা-বিদেশে থাকা সেই ব্যক্তি সমর্থন করবে না। তিনি যোগ করেন, ভারতের উদ্বেগ দমনের জন্য বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে হবে যে এখানে কোনো কার্যক্রম ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে না।

এই ঘটনার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করে সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল হাই বলেন, ভারতের এই নড়াচড়া তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বহন করে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত নির্ভর করবে ভবিষ্যতে যে সরকার নির্বাচিত হবে তার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ওপর—অর্থাৎ দুই দেশের সম্পর্কের গতিমাত্রা ও কূটনৈতিক সহজতার ভিত্তিতেই এ ধরণের বিষয় সমাধান হবে।

এ নিয়ে রাষ্ট্রীয় ও কূটনৈতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য যোগাযোগ ও আলোচনা হবে বলে প্রত্যাশা দেখা গেছে; একই সঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভ্যুত্থান, আশ্রয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিবেচনায় এমন ঘটনা কেবলই আইনি নয়—এটি কূটনৈতিক সংবেদনশীলতাও বহন করে। তাই বিষয়টি সামলাতে বাংলাদেশ ও ভারতের নিয়ন্ত্রিত কূটনীতিক চ্যানেলগুলোর কার্যকর সমন্বয় এবং উভয়পক্ষের নিরাপত্তাজনিত আশ্বাস প্রয়োজন হবে।

সামগ্রিকভাবে, রাধা দত্তের দাবি ও বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যগুলো ইঙ্গিত করে—প্রতিবেশী ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতি পরিবর্তনের প্রভাবে এখানে কট্টর রাজনীতিক কর্মকাণ্ড ও প্রবাসী রাজনৈতিক ব্যাখ্যার ওপর নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হতে পারে; এবং এ ধরনের কূটনৈতিক সংকেতের প্রভাব ভবিষ্যত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিজ্ঞাপন

https://moreshopbd.com/