রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৭:৩৯ ২৯ আগস্ট ২০২৪
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ৯নং বল্লা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন ৭ ইউপি সদস্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২৭ আগস্ট মঙ্গলবার কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, উপ পরিচালক, স্থানীয় সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা। এর আগে তাঁরা জরুরি সভা করে চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
ইউএনও শাহাদাত হুসেইন জানান, ‘অভিযোগটি পেয়েছি। অভিযোগ পত্রে ৭ ইউপি সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই বছর ৯ মাসের মধ্যে চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদের নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। একাধিকবার সতর্ক করার পরও তিনি অনিয়ম করে যাচ্ছেন। ইউপি সদস্যদের কোনো সম্মানী ভাতা না দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সভাপতি হয়ে নিজেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
১ নং ওয়ার্ড বল্লা গোরস্থান এলাকার ভুক্তভোগী রোকেয়া,লুৎফর নাহার,রোকসানা,সরস্বতী বলেন, আমরা ১৫ বছর যাবত অতিদরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি ইজিপিপির কাজ করি, ফরিদ চেয়ারম্যান আসার আগে আমাদের মোবাইল একাউন্টে টাকা আসতো এই চেয়ারম্যান আসায় কিছু দিন দেওয়ার পরে আমাদের মোবাইল একাউন্টে টাকা না আসাতে উপজেলায় গিযে জানতে পারি আমাদের মোবাইল একাউন্ট চেয়ারম্যান বাদ দিয়ে তাদের নিজস্ব নাম্বারে একাউন্ট করে দিয়েছে। একাউন্ট পরিবর্তন করে চেয়ারম্যান আমাদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার আরো জানান, আমাদের চল্লিশ দিনে প্রকল্পে ৩০-৩৫ জন লোক কাজ করার নিয়ম থাকলেও ৮-১০ জন লোক দিয়ে মাত্র ১০-১২দিন করে কাজ করান।
৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত ইউপি সদস্য সালমা খানম জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই সরকারি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় না করে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া পরিষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সদস্যদের সাথে সমন্বয় না করে চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দের প্রায় ৮০℅ টাকা এবং অতিদরিদ্র শ্রমিকের ৯০℅ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।
১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম এ বিষয় বলেন, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বরে নির্বাচন হওয়ার পর ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারী ১ম একটি মিটিং হয়। তার পর এ পর্যন্ত আর কোনো মিটিং করে নাই। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কোন নিয়মিত তোয়াক্কা না করে, ইউপি সদস্যদের সাথে সমন্বয় না করে, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বরাদ্দ টিআর, কাবিখা, এডিপি, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর ১℅, এলজিএসপি,উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, অতিদরিদ্রের কর্মসূচি, ইজিপিপি প্রকল্প, হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স সহ তার নিজস্ব লোক দ্বারা আদায় করে পরিষদে জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন।
তবে ইউপি সদস্যদের এসব অভিযোগের বিষয়ে বল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম অন্য অন্য ইউপি সদস্যদের কে ভয়বিতি দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়েছে। পরিষদে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি আমার নিরাপত্তা জন্য পরিষদের কাজ রামপুর বাজারে আমার অফিসে বসে করতেছি। স্বাভাবিক অবস্থা হলেই পরিষদে যাবো। এসময় তিনি বলেন,
অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকার বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন