শুক্রবার , ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ২১ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:১১ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দক্ষিণ আটলান্টিক সাগরে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘকাল টিকে থাকা হিমশৈল ‘এ২৩এ’। প্রায় চার দশক আগে, ১৯৮৬ সালে অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার–রন বরফস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল এটি। তখন এর আয়তন ছিল প্রায় ৩ হাজার ৬৭২ বর্গকিলোমিটার, ওজন আনুমানিক এক ট্রিলিয়ন মেট্রিক টন—যা আকারে যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের চেয়েও বড়।
ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের (BAS) সমুদ্রবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু মেইজার্স জানিয়েছেন, “এ২৩এ বর্তমানে দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে, আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।”
১৯৮৬ সালে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বিশাল বরফখণ্ডটি ওয়েডেল সাগরের তলদেশে আটকে যায় এবং সেখানেই তিন দশকের বেশি সময় কাটায়। ২০২০ সালে বরফ গলতে শুরু করায় এটি পুনরায় ভেসে ওঠে এবং অ্যান্টার্কটিকার স্রোতের টানে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে এ২৩এ-এর আয়তন ১ হাজার ৭৭০ বর্গকিলোমিটার, যা মূল আকারের অর্ধেকেরও কম। এর সবচেয়ে চওড়া অংশের বিস্তৃতি প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এখন এটি প্রতিদিন গড়ে ২০ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে।
গত মার্চে বরফখণ্ডটি দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপের কাছে চলে আসায় স্থানীয় পেঙ্গুইন ও সিলদের জন্য আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে মে মাসে এটি আবার উত্তরমুখী পথে যাত্রা শুরু করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমশৈল ভেঙে যাওয়া প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঘটনা দ্রুততর হচ্ছে। উষ্ণ সমুদ্রপানি ও প্রবল ঢেউ বরফখণ্ডটির নিচের দিক থেকে গলতে শুরু করেছে, ফলে ভাঙন আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে।
এ২৩এ-এর পতনের ফলে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈলের খেতাব গেছে ডি১৫এ-এর দখলে। এর আয়তন প্রায় ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং এটি অ্যান্টার্কটিকার উপকূলে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিস অঞ্চলের কাছে স্থির হয়ে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন