মঙ্গলবার , ০১ জুলাই, ২০২৫ | ১৭ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০৩ ১ জুলাই ২০২৫
বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক এবার শুধু রকেট কিংবা ইলেকট্রিক গাড়ির গণ্ডি পেরিয়ে রাজনীতির ময়দানে নামার ঘোষণা দিলেন। টেসলা, স্পেসএক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মালিক মাস্ক সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে প্রস্তাবিত “ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল” নামক ৩ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যয় পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, যদি এই বিল পাস হয়, তবে তিনি “আমেরিকা পার্টি” নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেবেন।
এক্স-এ দেওয়া তার এক পোস্টে মাস্ক বলেন, “এই বিলটি উন্মাদ ও লজ্জাজনক। যারা এর পক্ষে ভোট দেবেন, তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত।” তিনি আরও বলেন, “এই একটি দল চলছে এখন, আমি একে বলি ‘পোর্কি পিগ পার্টি’। এখন সময় এসেছে কিছু পরিবর্তন আনার।”
মাস্কের এই ঘোষণার পরপরই এক্স-এ চালানো একটি জরিপে প্রায় ৫.৬ মিলিয়ন ব্যবহারকারী অংশ নেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পক্ষে ভোট দেন।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দুই-দলীয় রাজনৈতিক কাঠামোর মাঝে একটি নতুন ও শক্তিশালী তৃতীয় দলের উদ্ভব অত্যন্ত জটিল। তবে মাস্কের বিপুল সম্পদ, সামাজিক মাধ্যমে প্রভাব এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারা তাকে এই কঠিন পথে এগিয়ে যেতে ব্যতিক্রমী শক্তি দিতে পারে।
এরই মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এবং ‘ফরওয়ার্ড পার্টি’র প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু ইয়াং ইলন মাস্কের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকার জনগণ নতুন নেতৃত্ব এবং দৃষ্টিভঙ্গি চায়। মাস্কের উদ্যোগ সেই পরিবর্তনের পথকে সুগম করতে পারে।”
বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এই পদক্ষেপ যদি কেবল হুমকিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তব রূপ নেয়, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে আসন্ন রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেস নির্বাচনে 'আমেরিকা পার্টি' যদি সংগঠিতভাবে অংশগ্রহণ করে, তবে তা বর্তমান দুই বড় দলের ভোট ব্যাংকে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক জন হেনরি বলেন, “ইলন মাস্ক কেবল একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা নন, তিনি একজন সামাজিক ট্রেন্ডসেটার। তার রাজনীতিতে প্রবেশ মানেই তা হবে উচ্চতর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।”
এই মুহূর্তে পুরো আমেরিকা জুড়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ—মাস্কের এই ঘোষণার পেছনে কেবল হতাশা, না কি সত্যিই রয়েছে এক সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক স্বপ্ন? সময়ই হয়তো এর উত্তর দেবে। তবে এটা নিশ্চিত, ‘আমেরিকা পার্টি’ নিয়ে এখন থেকেই উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন।
বিজ্ঞাপন