লালন কন্যা ফরিদা পারভীনের শেষ যাত্রা: শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

লালন কন্যা ফরিদা পারভীনের শেষ যাত্রা: শহীদ মিনারে মানুষের ঢল

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০১:১১ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চোখ ছলছল, হাতে ফুল—মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও ফরিদা পারভীনের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজির হন শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ। শনিবার রাত সোয়া ১০টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন দেশের কিংবদন্তি লালনগীতি শিল্পী ফরিদা পারভীন। তাঁর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ফরিদা পারভীনের মরদেহ শহীদ মিনারে পৌঁছে। শেষ শ্রদ্ধার আয়োজন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সংস্থা (জাসাস)। অনুষ্ঠানে এক ভিডিও কলে অংশ নেন সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা এবং তিনি ফরিদা পারভীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানসহ আরও অনেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

বিএনপির সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও চিত্রনায়ক উজ্জ্বল বলেন, “আমরা একজন লেজেন্ডারি শিল্পীকে হারিয়েছি। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।” বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, “ফরিদা পারভীন দেশাত্মবোধক গান ও লালনের গান প্রসারে অসামান্য অবদান রেখেছেন। শেষ জীবনে তিনি এক ‘লালন সাধক’ হিসেবেই জীবন যাপন করেছেন, যা তাঁকে একজন অনন্য শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে চিহ্নিত করে।”

ভারী বৃষ্টিকেও উপেক্ষা করে শহীদ মিনারে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। কেরানীগঞ্জ থেকে ছুটে এসেছেন তাওহীদের পাঠশালার খাদেম আলী আরিফ আকবর, তিনি জানান, “তিনি লালনের বাণীকে সহজভাবে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং বাউলবাদের গান ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছেন।”

ফরিদা পারভীনের স্বামী, বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম বলেন, “শ্রদ্ধা জানানোর জন্য যারা এসেছেন, তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।”

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুষ্টিয়ায় নেওয়া হয়। বাদ মাগরিব তাঁকে কুষ্টিয়ার সমাধিস্থলে সমাহিত করা হবে। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

ফরিদা পারভীনের অবদান শুধু বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নয়, লালনগীতির জনপ্রিয়তা ও বাউলসংগীতের প্রসারেও অমর হয়ে থাকবে।

বিজ্ঞাপন