শেখ হাসিনা লাদেনের খালাতো বোন, গুহা থেকে ভিডিও দেন: রিজভী

শেখ হাসিনা লাদেনের খালাতো বোন, গুহা থেকে ভিডিও দেন: রিজভী

অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি
অনলাইন ডেস্ক, মোরনিউজবিডি

প্রকাশিত: ০৫:০৭ ১ মে ২০২৫

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তুলনা করেছেন ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, “শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন লাদেনের খালাতো বোন। যেমন লাদেন গুহা থেকে ভিডিও বার্তা দিতো, তেমনি শেখ হাসিনাও এখন ভিডিও বার্তা দেন।”

বৃহস্পতিবার (১ মে) বরিশালের সদর রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর শ্রমিক দলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রিজভী অভিযোগ করেন, “দেশে ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক। অথচ তারাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত। ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, তাদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার নেই। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩-এর মাধ্যমে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মালিকের স্বার্থে আইন হয়েছে, শ্রমিকের স্বার্থে হয়নি। যার ফলে গার্মেন্টস, জুটমিল, চিনিকল—সব জায়গায় শ্রমিকরা জীবন দিচ্ছে।”

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, “শেখ হাসিনার পেটোয়া বাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব পোশাক শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে আঞ্জুমান আরা, জালাল উদ্দিন, রাসেলসহ অনেককে হত্যা করেছে। এই রক্তে রচিত হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ‘মহাবিপ্লব’। আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আজও শ্রমিকরা দুঃসহ জীবনযাপন করছে। কল-কারখানা বন্ধ, ছাঁটাই চলছে, হাজার হাজার শ্রমিক বেকার। তাদের সন্তানরা স্কুলে যেতে পারছে না। সরকারের নজর নেই এদিকে।”

আওয়ামী লীগের আমলে প্রবাসে কর্মী পাঠানো নিয়ে সিন্ডিকেটের অভিযোগ এনে রিজভী বলেন, “মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে হলে মাসুদ, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালসহ একাধিক সিন্ডিকেট সদস্যের কাছে ঘুষ দিতে হতো। শ্রমিকরা জমি বিক্রি করে বিদেশে গিয়েও কাজ পেতো না।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, “আপনি বার্মার রাখাইনে মানবতার করিডোর তৈরি করতে চান, অথচ দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার কথা শুনছেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।”

শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা কোথায় আছেন কেউ জানে না। পার্শ্ববর্তী দেশে আছেন বলে জানা গেলেও সেখানে সরকারপ্রধান পর্যন্ত কিছু বলছেন না। তিনি গুহার মধ্যে লুকিয়ে থাকা লাদেনের মতো আচরণ করছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২২৭টি হত্যা মামলার কথা ভিডিও বার্তায় এসেছে এবং সেটি ফরেনসিক পরীক্ষায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে। “প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলতে পারেন, ২২৭টি হত্যা নিশ্চিত হলো?”—এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এটা সরাসরি হত্যার হুমকি।”

রিজভী বলেন, “যিনি জনগণের রক্ত পান করেছেন, শিশু, কিশোর, শ্রমিক, রিকশাওয়ালার রক্ত ঝরিয়েছেন, তিনি এখন মামলা হওয়ায় তাদের জীবন কেড়ে নিতে চাইছেন।”

পরিশেষে রিজভী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ দিন। নয়তো আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটলে কেউ রক্ষা পাবে না।”

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আকন কুদ্দুসুর রহমান, হাসান মামুন, এবায়দুল হক চাঁন, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন